
ভূমিকম্পে তাফেঘাঘতে গ্রামের অধিকাংশ মানুষই মারা গেছে। ছবি: বিবিসি
আমার কাগজ ডেস্ক
মরক্কোতে ভূমিকম্পের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২ হাজার ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে ২ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ। এর মধ্যে ধারণা করা হচ্ছে ভূমিকম্পে অ্যাটলাস পর্বতমালার তাফেঘাঘতে গ্রামের অধিকাংশ মানুষই মারা গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মরক্কোর অ্যাটলাস পর্বতমালার তাফেঘাঘতে গ্রামের প্রথম যে বাসিন্দার সাথে তাদের দেখা হয়, তিনি তাদের গ্রামের পরিস্থিতির একটা আনুমানিক ধারণা দিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এই গ্রামের সব মানুষ হয় হাসপাতালে, আর না হয় মৃত।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামের ২০০ জন বাসিন্দার মধ্যে ৯০ জনের মৃত্যুর খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আরও অনেকেই এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা হাসান আমাদের বলছিলেন, ‘তারা (নিখোঁজরা) সরে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। তাদের হাতে নিজেদের বাঁচানোর সময়ও ছিল না।’
হাসান বলছিলেন, তার চাচা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তাকে সেখান থেকে বের করার কোনো সম্ভাবনাও নেই।
গ্রামে কারো কাছে এই মাত্রার ধ্বংসস্তূপ খোড়ার যন্ত্রপাতি নেই। আর তিন দিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞরাও এসে পৌঁছায়নি।
‘আল্লাহ আমাদের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছেন এবং আমরা সবকিছুর জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু এখন আমাদের সরকারের সহায়তা দরকার। তারা মানুষকে সাহায্য করার বিষয়ে অনেক দেরি করে ফেলেছে’, বলছিলেন তিনি।
হাসান বলছিলেন যে মরক্কোর কর্তৃপক্ষের উচিৎ সব ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণ করা। কিন্তু তিনি সন্দেহ পোষণ করেন যে নিজেদের অহংকারের কারণে হয়তো তারা সেই সহায়তা নেবে না।
গ্রামের আরেক প্রান্তে বেশ কিছু মানুষ একজন ব্যক্তিকে সমবেদনা জানাচ্ছেন। জানা যায়, ঐ ব্যক্তির নাম আব্দো রহমান। ভূমিকম্পে তার তিন ছেলে ও স্ত্রী মারা গেছে।
বালি-পাথরের একটি স্তূপের দিকে নির্দেশ করে তিনি বলছিলেন, ’আমাদের বাড়ি ছিল ওখানে।’ একসময় তার বাড়ি থাকলেও এখন সেখানে কোনো বাড়ির চিহ্নও নেই।
‘ঐ যে দেখুন সাদা কম্বল ও কিছু আসবাব এখনো দেখা যাচ্ছে। বাকি সব মাটির সাথে মিশে গেছে।’
মরক্কোর অ্যাটলাস পর্বতমালা অঞ্চলের একের পর এক গ্রামে ঠিক এই চিত্রই এখন দেখা যাচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী এই সম্প্রদায়গুলো সাধারণত আধুনিক পৃথিবী থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নই থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি বাইরের সাহায্য প্রয়োজন তাদের।