আমার কাগজ ডেস্ক
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া ভোট উৎসব চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
প্রথম দফায় শতাধিক আসনে ভোটগ্রহণের পর দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়েছিল ৮৮টি আসনে। তৃতীয় দফায় ভারতজুড়ে ১১টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকসভার ৯৩ আসনে প্রার্থী নির্বাচনে এ দফায় ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। এর মধ্যে নরেন্দ্র মোদীও রয়েছে। তিনি গুজরাটের আহমেদাবাদের ভোটার। সকাল সাড়ে ৭টার একটু পরই ভোট কেন্দ্রে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি রনিপের নিশান উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোট দেন । এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেখানে তাকে স্বাগত জানান।
নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে ভোট দিতে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জানান, গতরাতেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে তিনি আহমেদাবাদে গিয়েছেন ভোট দিতে।
গতবারের নির্বাচনে তৃতীয় দফার ৯৩ আসনের মধ্যে ৮০টিতেই জিতেছিল বিজেপি ও তার শরিক দল। কংগ্রেস জোট পেয়েছিল মাত্র ১১টি আসন। কিন্তু এবার তাদেরকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারণ কর্ণাটকে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস শক্তি অর্জন করেছে। এছাড়া মহারাষ্ট্রের ভোটাররাও বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
তৃতীয় দফায় গুজরাটের ২৬ আসনের মধ্যে ২৫ আসনে ভোট হচ্ছে। এই রাজ্যের সুরাট আসনে বিজেপি প্রার্থী আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। কর্ণাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে ১৪টির ভোট হয়ে গেছে। বাকি ১৪ আসনের ভোট আজ হচ্ছে। উত্তর প্রদেশে এই দফায় ভোট ১০ আসনে। এখানে বিজেপির লড়াই সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে। এই দলের নেতা অখিলেশ যাদবের স্ত্রী ডিম্পল গতবার জিতেছিলেন মৈনপুরী থেকে। এবারেও তিনি প্রার্থী।
এছাড়া ভোট হচ্ছে মহারাষ্ট্রের ১১, মধ্যপ্রদেশের ৪, আসামের ৪, গোয়ার ২, বিহারের ৫ ও পশ্চিমবঙ্গের ৪ কেন্দ্রে। মহারাষ্ট্রের বারামতি আসনে প্রার্থী শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে। মঙ্গলবারের ভোটে বেশ ক’জন হেভিওয়েট প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
আগের দুই ধাপে যথাক্রমে ৬৬.১৪ এবং ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। গত নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপের তুলনায় যা সামান্য কম। তাই এবারে বেশি সংখ্যক ভোট দিয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ দফার নির্বাচনে আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিলো, তবে এরইমধ্যে বেশ কিছু জায়গা বৃষ্টি হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
ভোটের আগে ক্ষমতাসীন বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ও বিরোধীরা চাঙা ছিলো। উভয় পক্ষের দাবি, সাত ধাপের ভোটের প্রথম দুটিতে ভালো করেছে তারা।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, বিজেপি সংবিধান পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। তেলেঙ্গানায় এক নির্বাচনী জনসভায় রাহুল গান্ধী বলেছেন, চলমান নির্বাচন দুটি আদর্শের লড়াই।
‘একপক্ষে কংগ্রেস চেষ্টা করছে সংবিধানকে রক্ষা করতে এবং অপরপক্ষে বিজেপি ও দেশটির মতাদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) চেষ্টা করছে সংবিধান ও মানুষের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করতে।’
পাল্টা দিতে ছাড়েননি এনডিএ নেতারাও। গেরুয়া শিবির এসসি, এসটি, ওবিসি কোটা থেকে মুসলমানদের ধর্মভিত্তিক সংরক্ষণ দেয়ার জন্য কংগ্রেসের নিন্দা করেছে। দলটির নেতারা অভিযোগ করছেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ভারত ব্লক ক্ষমতায় এলে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে।
মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম তিন দফার ভোটের পরই দেশটির ৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২৮৩ আসনে ভোট নেয়া সম্পন্ন হবে। বাকি থাকবে চার দফা।
পরের ধাপ গুলো হল যথাক্রমে চতুর্থ দফা ১৩ মে, পঞ্চম দফা ২০ মে, ষষ্ঠ দফা ২৬ মে এবং সপ্তম ও শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা হবে ৪ জুন। সেদিনই জানা যাবে দিল্লির মসনদে যাচ্ছে কোন দল।