গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি জিয়ারত করেছেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এসময় তিনি মওলানা ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের প্রশংসা করলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা পৌনে একটায় বড় ভাই ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করেন কাদের সিদ্দিকী। এ সময় তিনি দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু ও জনগণের আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। আমি আওয়ামী লীগের কোনো দুর্দিন দেখি নাই। কারণ মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে আর বর্তমান আওয়ামী লীগ এক নয়।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম। সবাই তখন ইঁদুরের গর্তের মধ্যে ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করার জন্য যাদের কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার কথা ছিল, তারা আমাকে কোনো সম্মান করেনি বা দেখায়নি। বরং তাদের থেকে অসম্মানিত হয়েছি। তবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক সম্মান পেয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আমি আগেও বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন বঙ্গবন্ধুকে বুকে লালন করেই বেঁচে থাকব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আমার আদর্শ। কিছু অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আমি সবসময় ছিলাম আছি ও আগামীতেও থাকব। আর টুঙ্গিপাড়ার মানুষদের অভিনন্দন জানাই। এরকম একটা দূর্বিপাকের মধ্যেও তারা জাতির পিতার যথাযথ সম্মান রেখেছে।’
ছাত্র-জনতার উদ্দেশে খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য আমি মনেপ্রাণে কামনা করি ও বিশ্বাস করি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে নেতৃত্ব করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে, সম্মান করে, যতটা সম্মান তাঁর প্রাপ্য, ততখানি সম্মান দিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যে মূল্যবোধ দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই মূল্যবোধ এখন আর নেই। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে আমি দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। অনেকে দেশপ্রেমের কথা বলেন, কিন্তু দেশপ্রেম এত সহজ জিনিস নয়। এটা অর্জন করতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ঝড়-তুফান এলে আবার তা কেটে যায়। কোনো অন্ধকারই চিরস্থায়ী নয়। কোনো দুর্যোগ স্থায়ী নয়। আকাশ আবার পরিষ্কার হবে। বঙ্গবন্ধুর মাজারে আজ আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন? আমি বলতে পারি যতক্ষণ উনি (শেখ হাসিনা) বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে থাকবেন, ততক্ষণ আমি তাঁর সঙ্গে থাকব।’