আমার কাগজ ডেস্ক
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ফেরত পাঠানো হবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৩৩০ জন মিয়ানমারের বিজিপি ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মাঝসমুদ্রে মিয়ানমারের জাহাজে তাদের হস্তান্তর করা হবে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের এসব সদস্যদের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে কক্সবাজারের কিনারি জেটি ঘাটে। সেখান থেকে বাংলাদেশি জাহাজে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে মাঝসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমুদ্রসীমায়। সেখানে অবস্থান করছে মিয়ানমারের জাহাজ। সেখানেই মূলত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর এসব সদস্যদের হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুমের তুমব্রু ও ডেকুবনিয়া সীমান্ত পরিস্থিতি গত মঙ্গলবার রাত থেকে স্বাভাবিক আছে। তবে মাঝে মাঝে তুমব্রু সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা যায়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তর সীমান্তে অস্থিরতা কমলেও কাটেনি আতঙ্ক। দুশ্চিন্তায় ৫ শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে থাকা দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা কেন্দ্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার অনুমোদনও এসেছে। পুরো সীমান্ত এলাকাটা বিজিবির তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রণে রাখা আছে।
অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে আর কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এমনিতেই মিয়ানমার নাগরিক প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছেন। এখন রোহিঙ্গা বা যেই আসুক না কেন, মিয়ানমার থেকে আর কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মিয়ানমারের চতুর্দিকেই যুদ্ধ লেগে আছে। বাংলাদেশ সীমানায় আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। আমরা দেখছি তাদের এই যুদ্ধ এতটাই তীব্র হয়েছে যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সরকারি কর্মকর্তা, ধারণা করছি দুই-একজন সেনা সদস্য আমাদের এখানে ঢুকে পড়েছেন। এদের মধ্যে কেউ অস্ত্র নিয়ে এসেছেন, কেউ অস্ত্র ছাড়া ঢুকেছেন। তবে তারা এসেছেন জীবন রক্ষার জন্য, যুদ্ধের জন্য না।
তিনি বলেন, যারা আত্মরক্ষার্থে এখানে আসছেন তাদের সরকারকে বলেছি নিয়ে যেতে। তারা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড সবাই অতন্দ্রপ্রহরীর মতো কাজ করছে। সেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, এ সীমানায় তাদের কেউ আসবে বলে মনে হচ্ছে না। তারপরও যদি আসে, আমাদের এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
বিজিপি সদস্যদের যারা আশ্রয় নিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণে তাদের কেউ জড়িত ছিলেন কি না জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো লিস্ট নেই। তবে আমরা সে সময় দেখেছি মাইলের পর মাইল পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, নদীতে লাশ ভেসে আসতে দেখেছি। সেখানে যে গণহত্যা চালাতে আমরা দেখেছি সে সময় তাদের আর্মি দাঁড়ানো ছিল। তবে তারাই গণহত্যা করেছেন কি না জানি না। আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার চলছে।