
মো. জুহায়ের আখতার সম্প্রীতি
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্সে) ভর্তি পরীক্ষায় উওীর্ণ হয়ে প্রতিবছর মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে পড়াশোনার সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১০ টি বিভাগের অধীনে মোট ৬০০ টি আসন বিদ্যমান। বিভাগগুলো হল- ইয়ার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং, ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট, টেক্সটাইল মেশিনারী ডিজাইন এন্ড মেইনটেনেন্স, ডাইজ কেমিক্যাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন। মেধা তালিকাতে অবস্থান অনুযায়ী, বিভাগ পছন্দের ভিওিতে শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত বিভাগে ভর্তি হয়।
তবে বিগত ৪৯ তম ব্যাচ পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি অফলাইনে ছিল। অফলাইন প্রক্রিয়ার কারণে ভর্তি প্রক্রিয়ার নির্ধারিত দিনে শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্যাম্পাসে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হতো, যা কখনও কখনও অসুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি করতো।
বিশেষত, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নবীন শিক্ষার্থীদের উপর তাদের বিভাগে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করতো। সিনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রায়শই বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে নবাগতদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। বিশেষ করে, নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের বিভাগ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিনিয়রদের দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত হয়রানির শিকার হতো। সিনিয়ররা তাদের বিভাগে ভর্তির জন্য নানাভাবে নবীনদের প্ররোচিত করত। এমনকি, অনেক সময় ভর্তি ফরম পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটত। এছাড়া পুরো প্রক্রিয়াটি ছিলো যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ।
এ ব্যাপারে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯ তম ব্যাচের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমার ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা আমার বর্তমান বিভাগে থাকলেও, একজন সিনিয়র ভাই আমাকে তার বিভাগে ভর্তির জন্য বলছিলেন। আমার ভর্তি ফরমটি দেখার কথা বলে তিনি কৌশলে সেটি পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। তবে আমি বাধা দিই।
এ ধরনের হয়রানি এবং দীর্ঘায়িত প্রক্রিয়া থেকে উত্তরণের জন্য বুটেক্স প্রশাসন ভর্তি প্রক্রিয়াকে অনলাইনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. এ টি এম ফায়েজ আহমেদকে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়াটিকে অনলাইন করার জন্য সফটওয়্যার বানানোর যথাযথ কাজ চলছে। ৫০ তম ব্যাচেও অনলাইনে কার্যক্রম প্রাথমিক পর্যায়ে শুরু করা হলেও, যথাযথ কারিগরি সহায়তার অভাবে পুরোপুরি চালু সম্ভব হয়নি। আশা করা হচ্ছে আগামী ৫১ তম ব্যাচ থেকে নবাগত শিক্ষার্থীদের আর এমন হয়রানির শিকার হতে হবেনা। এর ফলে সময়ের অপচয়ও অনেকাংশে কমে আসবে।