
আমার কাগজ প্রতিবেদক
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু হয়েছে। সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে পূর্বে ধারণকৃত বাজেট বক্তৃতা তুলে ধরেন। এটি বাংলাদেশের ৫৪তম বাজেট এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রণীত প্রথম বাজেট, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই বাজেটে কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, রাজস্ব আহরণে দক্ষতা বৃদ্ধি, স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষা, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, ভ্যাট ও কর পরিশোধ ব্যবস্থা সরলীকরণ এবং ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে ব্যবহার কমাতে প্লাস্টিকজাত হোম ও কিচেন ওয়্যারসহ প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের ভ্যাট দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে পারে সরকার। হেলিকপ্টার আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হতে পারে। যার মধ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর থাকছে। এর ফলে হেলিকপ্টারে যাতায়াতে ভাড়া বাড়বে। কনভেনশন হল, কনফারেন্স সেন্টারের সেবার ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের খরচ বাড়বে।
একাধিক গাড়ি থাকলে সিসিভেদে ২৫ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পরিবেশ সারচার্জের বিধান রয়েছে এখন। এটি বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হতে পারে। রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এসির ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। মোবাইল ফোনের বিভিন্ন উপকরণ- প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড, চার্জার, ব্যাটারি, হাউজিং, ক্যাসিংসহ অন্যান্য উপকরণে ভ্যাট ২ শতাংশের জায়গায় ৪ শতাংশ করা হতে পারে। এলপিজি সিলিন্ডারের ভ্যাটহার বেড়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।
বাড়বে বাড়ি নির্মাণের খরচ। সিমেন্টশিট উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, ফেরো ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ অ্যালয় উৎপাদন পর্যায়ে এক হাজার টাকা প্রতি টন থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ২০০ টাকা প্রতি টন করা হতে পারে। ফেরো সিলিকন অ্যালয়ের উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি টনে ভ্যাট এক হাজার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা হতে পারে। ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির সেবা পর্যায়ে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। লিফট উৎপাদনে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ করা ও নির্মাণ সংস্থার সেবার বিপরীতে ভ্যাট বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।
অন্যদিকে ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি, আয়রন, রাইস কুকারসহ এ জাতীয় পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি ছিল। আসছে বাজেটে এসব পণ্যে ৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হতে পারে। ফোর স্ট্রোক থ্রি হুইলারের ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হতে পারে। কটন সুতা, কৃত্রিম আঁশ ও অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি ইয়ার্নের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়ানো হতে পারে।