
oppo_0
মোঃ ফারুক
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলাকে জেলা অবিলম্বে করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ শনিবার (৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বেঙ্গল এন্ড হিমালয়ান বেসিন (আইআইবিএইচবি) ও ড. ঘোষ এন্ড সায়েন্স টেকনোলজি ইন্সটিটিউট, বাজিতপুর’ আয়োজিত উক্ত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন আমেরিকার চার্লস টাউন অধ্যাপক ও পানি গবেষক ড. রাজ বিহারি ঘোষ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাজিতপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসীম মাহমুদ, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রনেতা জহিরুজ্জামান জহির, সাবেক ছাত্রনেতা বদরুল আলম শিপু, বাজিতপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক মিয়া, ব্যাংক কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল বোরহানসহ ঢাকায় অবস্থানরত বাজিতপুরবাসী বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ।
অনুষ্ঠান সঞ্চায়লনায় ছিলেন শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির সহকারী রেজিস্ট্রার দেশবরেন্য চিত্রশিল্পী শহিদুল ইসলাম দুলাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. রাস বিহারী ঘোষ বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, ঐতিহ্যবাহী বাজিতপুর উপজেলাকে জেলা হিসেবে বাস্তবায়নের দাবি দীর্ঘদিনের। যুক্তিসঙ্গত এই দাবি বাস্তবায়নেও আমরা বদ্ধ পরিকর। কেননা জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যেসব অবকাঠামগত সুবিদানী ও আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি রয়েছে, তার প্রায় সবটুকুই দৃশ্যমান আছে এই বাজিতপুরে। দীর্ঘকাল ধরে এই দাবির পক্ষে উঠান বৈঠক, মতবিনিময় সভা সেমিনারসহ সব ধরনের কার্যক্রম পুরো কিশোরগঞ্জ জুড়ে চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে যেকোনো মূল্যে বাজিতপুরকে জেলা রূপান্তরিত করতে হবে। এ দাবি আদায়ে বাঁচবো, না হয় মরবো। তিনি বলেন, বাজিতপুরকে জেলা করতে গেলে যা যা দরকার, তার সব আয়োজনই আমাদের আছে। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের কাছ থেকে এ দাবি আদায় করতে হবে।
বক্তারা বলেন, ‘ভৌগলিক অবস্থানসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় বাজিতপুর জেলা হওয়ার যৌক্তিত দাবিদার। এ উপজেলার সাথে নৌপথ, রেলপথ ও সড়কপথে পার্শ্ববর্তী উপজেলারগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, জেলার প্রশ্নে বাজিতপুরের মানুষদের কারো কোনো দ্বিমত নাই, আমরা সবাই এক। আমাদের পাশের যে উপজেলাগুলোর রয়েছে সেসব উপজেলার নেতৃবৃন্দের সাথে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করতে হবে। সর্বোপরি জাতীয়ভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাজিতপুর জেলা আদায় করতে হবে। আমার বিশ্বাস করি, আমরা যদি চেষ্টা করি বাজিতপুর জেলা হিসেবে আশার আলো দেখবে।’
বক্তারা বলেন, যেকোনোভাবে বাজিতপুরকে জেলায় রূপান্তরিত করতে হবে। ভৌগলিক দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বাজিতপুরের সঙ্গে সারা দেশের নৌপথ, রেলপথ ও সড়কপথে সংযুক্তি রয়েছে। ১৮৬৯ সালে ঘোষিত পৌরসভা বাজিতপুরকে ‘কৃষি জেলা’ ও মহকুমা রূপান্তরের উদ্দেশে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৯১২ সালেই বাজিতপুরে প্রায় ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। বাজিতপুর ব্রিটিশ আমল থেকেই জেলা হওয়ার কথা ছিল।
বাজিতপুর জেলা হওয়ার যৌক্তিক কারণসমূহ: ১৮৩৪ সালে, অর্থাৎ এখন থেকে ১৯১ বছর আগেই তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বাজিতপুরে সাতটি প্রশাসনিক এলাকার দেওয়ানী (চৌকি) আদালত প্রতিষ্ঠা করে, এর মধ্যে ভৈরব, কুলিয়ারচর, নিকলী, অষ্টগ্রাম ও বাজিতপুর-এ পাঁচ থানার চৌকি আদালতের কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে; ১৮৩৫ সালে, অর্থাৎ ১৯০ বছর আগেই বাজিতপুরকে থানায় উন্নীত করা হয়; ১৮৬৯ সালে, অর্থাৎ ১৫৬ বছর আগেই বাজিতপুরকে পৌরসভা ঘোষণা করা হয়; ১৯১২ সালে, অর্থাৎ ১১৩ বছর আগেই মহকুমা করার লক্ষ্যে বাজিতপুরে প্রায় ২০০ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হয়; দেশের খ্যাতনামা জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জহুরুল ইসলাম নার্সিং ইনস্টিটিউট অবস্থিত এ বাজিতপুরেই; ভৌগলিক দিক দিয়ে সবচেয়ে যোগ্য অবস্থানে রয়েছে বাজিতপুর উপজেলা, এ উপজেলার চারদিকে রয়েছে অষ্টগ্রাম, নিকলী, কটিয়াদী, কুলিয়ারচর ও ভৈরব।
সবমিলিয়ে এটুকু তো দাবি করাই যায় যে, আজ থেকে ২০০ বছর আগেই বাজিতপুর বিভাগীয় শহর হিসাবে গড়ে ওঠার সকলরকম উপযোগিতা অর্জন করেছিল।