কক্সবাজার প্রতিনিধি
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৯ সদস্য।
১৪ এপ্রিল ( রোববার) সকালে টেকনাফের খারাংখালী এবং ঝিমংখালী সীমান্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে গত মার্চে বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন ১৭৯ জন মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। তারাও নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নে রয়েছেন। তাদের মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
নতুন করে কিছু মিয়ানমারের বিজিপি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ভাষা সমস্যাসহ নানা কারণে আমরা পরিপূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে যেটুকু তথ্য সংগ্রহ করেছি তাতে সকলেই মিয়ানমারের বর্ডার পুলিশের সঙ্গে যুক্ত বলে জেনেছি। বিজিপির সদস্যরা আমাদের হেফাজতে রয়েছেন।
এদিকে ঈদের দিন থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান তুমুল চলমান যুদ্ধে একের পর এক মর্টার শেল-গোলার বিকট শব্দে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না।
টেকনাফের হ্নীলার স্থানীয় বাসিন্দা মো. হুমায়ুন বলেন, ঈদের পর শুরু হওয়া ওপারের গোলার শব্দ এখনো এপারে পাওয়া যাচ্ছে। যুদ্ধে টিকতে না পেরে প্রাণে বাঁচতে দেশটির বিজিপির ৯ সদস্য সীমান্ত দিয়ে এপারে ঢুকে পড়েছে। বিজিবি তদের হেফাজতে নিয়েছে বলে শুনেছি।
পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যের সংখ্যা আরে বাড়তে পারে বলে সীমান্তের লোকজন ধারণা করছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, বিজিপি সদস্যদের নিরস্ত্র করে বিজিবির হেফাজতে নিয়েছে। সীমান্তে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। পাশাপাশি সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি সর্তক অবস্থানে আছেন।
এর আগে গত ১১ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন ১৭৯ জন মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। তারাও নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নে রয়েছেন। তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এরও আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর জের ধরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে বিজিপিসহ ৩৩০ জন। এরমধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।