আমার কাগজ প্রতিবেদক
“আমি যেন ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণ বা দায়ী না হই” ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর এই ল্যান্ডমার্ক উক্তিকে উপজীব্য করে আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগ ও বনশ্রী সোসাইটির উদ্যোগে সোসাইটির মিলনতায়নে এক মতবিনিময় সভা এবং ট্রাফিক সচেতনতামূলক অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার ও সোসাইটির সহসভাপতি মো. শফিকুল করিম শফিকের সঞ্চালনায় উক্ত অংশীজন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
প্রধান আলোচক ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএমপির ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মঈনুল হাসান পিপিএম।
বনশ্রী সোসাইটির সভাপতি শিল্পপতি মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বনশ্রী সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক। আরো উপস্থিত ছিলেন মতিঝিল বিভাগের এডিসি ট্রাফিক মোল্লা তবিবুর রহমান, রামপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান। এছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ ও বনশ্রী সোসাইটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের রামপুরা ট্রাফিক জোনের অন্তর্গত বনশ্রী চার লক্ষ মানুষের আবাসিক এলাকা। কালের বিবর্তনে উক্ত এলাকায় একাধিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, হাসপাতাল, বিপণী-বিতান, অগণিত ফুড কোর্ট গড়ে উঠেছে। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত এলাকায় যান ও জনের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল থেকে মেরাদিয়া ও তদসংলগ্ন এলাকায় (১ কিলোমিটার এর অধিক জায়গা জুড়ে) কোন রোড বিভক্তিকরণ না থাকায় বিভিন্ন সময় লেন ভায়োলেশনসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রোড বাইপাস হওয়ার কারণে সার্বক্ষণিক বিমানের জেট ফুয়েল পরিবহন ও নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এমন বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে এ অংশীজন সভা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে।
মতবিনিময় সভায় বনশ্রী সোসাইটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার তুলে ধরা হয়।অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোঃ মইনুল হাসান পিপিএম বলেন, বনশ্রী সোসাইটি কর্তৃক ট্রাফিক কমিউনিটি পুলিশ মোতায়ন এবং সিসিটিভি স্থাপনের মাধ্যমে আগামীদিনে এই এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সুসঙ্গত করা হবে। ব্যাটারি চালিত রিকশা যাতে এলাকায় চলতে না পারে তার জন্য তিনি দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করেন এবং এই লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশসহ সকলের উদ্যোগী ভ‚মিকা পালন করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন। মঈনুল হাসান বলেন, ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। যারা সড়ক যত্রতত্র পার্কিং ব্যবস্থায় বাধা বিপত্তি সৃষ্টি করবে আমরা আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে সম্মিলিতভাবে তাদের মোকাবেলা করবো। তিনি বনশ্রী-মেরাদিয়া সড়কে যেকোনো বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগে দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সকলকে সহযোগিতার আহবান জানান।
প্রধান আলোচক বক্তব্যে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, ট্রাফিক রামপুরা জোনের সঙ্গে বনশ্রী সোসাইটির কমিউনিটি পুলিশসহ বনশ্রী সোসাইটির নাগরিকদের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যাপারে জোর দেন। ট্রাফিক ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ব্যাটারী চালিত রিকশা। আপনারা যদি এ ব্যাটারি চালিত রিকশা প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে সড়কে অনেকটাই শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজন সাধারণ মানুষের সচেতনতা।
প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, বনশ্রী এলাকার যে কোন প্রকার ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ তার কাছে অগ্রঅধিকার পাবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বনশ্রী সোসাইটি আবদুল কালাম বর্তমান সুশৃংখল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রাফিক রামপুরা জোনের সকল অফিসার ফোর্সকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মতবিনিময় সভা শেষে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বনশ্রী সোসাইটি কর্তৃক “রোড কোন ও রোড ডিভাইডার”-এর শুভ উদ্বোধন করেন। উক্ত ট্রাফিক কোন এবং রোড ডিভাইডার যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মুনিবুর রহমান জানান।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিকগণ, সাধারণ মানুষসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ ট্রাফিক পুলিশের এমন সচেতনতামূলক কার্যক্রমের ভুয়সী প্রশংসা করেন।