
আমার কাগজ ডেস্ক
তৃণমূল রাজনীতিতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এখন জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ফেনীর কৃতি সন্তান তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
জানতে চাইলে তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির প্রতি ঝোঁক ছিল তার। সেই হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশেষ করে জাতীয় স্বার্থে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তার রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের কল্যাণে কাজ করা। সেই জন্য তিনি ছাত্র জীবন থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত হন। যে রাজনীতি পেশা না হয়। যাদের রাজনীতি পেশা হয়ে যাবে সে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পাবেন না। রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সর্বাত্মক কাজ করাই তার অঙ্গীকার বলেও তিনি জানান। সেই হিসেবে তিনি ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে নতুন রাজনৈতিক দল জনতার অধিকার পার্টি (পিআরপি) গঠন করেন।
তিনি আরো জানান, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দিনের ভোট রাতে করায় দেশে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই হিসেবে ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক দল মিলে ইলেকশনে অংশগ্রহণ করলেও তিনি ছিলেন ভিন্ন এক প্রক্রিয়ার রাজনীতিতে। বাংলাদেশ মুসলিম লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে হারিকেন প্রতীকে তিনি ফেনী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
তারেক ভূঁইয়া জানান, ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন তিনি । জাতীয় প্রেসক্লাবে তৎকালীন সময়ে ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, জুনায়েদ সাকিব, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সহ জাতীয় রাজনীতিবিদদের নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন জনতার অধিকার পার্টি (পিআরপি) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল। কিন্তু হঠাৎ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে ধরপাকড়ের সৃষ্টি হয় একই বছরের ১০ ডিসেম্বর। ডিসেম্বর মাসেই পল্টন অফিস থেকে বের হওয়ার পথে রাস্তা থেকে পল্টন থানার পুলিশ তাকে এবং তার দলের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে। সেখানে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এরপর বিনা অপরাধে দুই মাস ছয় দিন কারাভোগ করতে হয়েছে।
আরো জানান, জাতীয় রাজনীতিতে তার অংশগ্রহণের মধ্যে আরো রয়েছে ২৬ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ইফতার আমন্ত্রণ। সেনাপ্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা। পবিত্র ঈদুল ফিতরে শুভেচ্ছা বিনিময়ে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
তিনি বলেন, জনতার অধিকার পার্টি যুগপৎ আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। প্রতিদিন মিটিং মিছিল এবং আন্দোলন সংগ্রাে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন । ২৮ অক্টোবর চরম উত্তেজনার ঠিক সেই মুহূর্তে দলের হাল ধরলেন তিনি । তখন চারদিকে বোমা, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা শুরু হলে তখনই তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন রাজপথে। রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার পর ২৮ অক্টোবরের বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখে প্রশাসন হর্ণ হয়ে খুঁজতে থাকে তাকে ও তার নেতাকর্মীদের। রাজনীতিতে ধীরে ধীরে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে তিনি আপোষ করেননি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানেরও তিনি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার জন্ম ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়া বাউল কুমার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে । তার পিতা হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মাতা ছাইরা বেগম। তারা দুই ভাই বোন। তিনি ফেনী শহরের বঙ্গবীর ওসমানী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর তিনি শহীদ মেজর সালাহ্ উদ্দিন মমতাজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।