
ফেনী প্রতিনিধি
গত বছরের তুলনায় এবার মুহুরি ও সিলোনিয়া নদীর পানির বৃদ্ধির হার বেশি ছিল। ফেনীর পরশুরামে মাত্র ৯ ঘণ্টায় প্রায় সাত মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক দ্রুত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোতে পানি ধীরে নামছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ থাকায় জোয়ারের পানি সহজে ভাটায় নামছে না, যার ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘায়িত হতে পারে। তবে এবার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
আবহাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় নোয়াখালীর মাইজদীতে, গড়ে ৭৯০ মিলিমিটার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় ফেনীতে, প্রায় ৭৩০ মিলিমিটার। গেল কয়েক বছর ধরে ভারী বর্ষণ ও উজানের পানির চাপে ফেনী জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ঘনঘন সৃষ্টি হচ্ছে।
চলতি বছর ৭ জুলাই থেকে ফেনীতে টানা দুই-তিন দিন অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। ৮ জুলাই মুহুরি ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে যায়। বিশেষ করে মুহুরি নদীর পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ১৩.৮৫ মিটার, যা আগের বছরের আগস্ট মাসে ২৭ ঘণ্টায় ৯ মিটার বৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি এবং দ্রুত।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, “পানি বৃদ্ধির গতি গতবারের তুলনায় এবার বেশি ছিল। তবে যেহেতু পানি দ্রুত নামছে, ক্ষয়ক্ষতিও তুলনামূলক কম হবে বলে মনে করছি।”
মুহুরি, সিলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানির চাপে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে এলেও লোকালয়ের পানি নামতে আরও সময় লাগবে।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, “ভরা কোটালের প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলে পানি থৈ থৈ করছে। এর ফলে ফেনীর মুহুরি নদীসহ অন্যান্য নদীতে পানি প্রবাহ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে পানি বঙ্গোপসাগরে নামার হারও কমে গেছে।”
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র ও আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৯ জুলাইয়ের পর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।