
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের বিভিন্ন হাটবাজারে ধস নেমেছে পেঁয়াজের দামে। ফলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা। এতে কৃষকরা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
হাটবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ দরে। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জয়পুরহাটের হাটবাজারগুলো ঘুরে পেঁয়াজের দামের এ খবর জানা গেছে।
নতুনহাটের পেঁয়াজ বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, আগের চেয়ে বাজারে পেঁয়াজ বেশি আমদানি হওয়ায় দাম একেবারে কমে গেছে। ২০ দিন আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দামে বিক্রি করেছেন। সেই পেঁয়াজ বর্তমান বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি কাজী হারুন রশিদ জানান, তিনি আজ জামালগঞ্জ চারমাথা হাটে ৪০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। পেঁয়াজের ছোট-বড় আকার ভেদে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে চার মাথার হাটে। তার ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে ২০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এ বছর তিনি গুটি পেঁয়াজের বীজ ১৪ হাজার টাকা মণ দরে কিনেছিলেন। এক বিঘা জমিতে চার মণ পেঁয়াজ বীজ কিনতে তার ৫৬ হাজার টাকা লাগে। সার ও মজুরিসহ ১ বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা।
একই গ্রামের ওমর আলী জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে ৪০-৫০ হাজার টাকা লোকসান গুনেছেন।
বর্গা চাষি আফজল হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে ২০ দিন আগে ১ হাজার টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। এ ফসল আবাদ করে তিনি কোনো লাভ পাননি।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা এবার ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, এ মৌসুমে পেঁয়াজ বীজের দাম বেশি থাকায় কৃষকের পেঁয়াজ চাষে বেশি খরচ হয়েছে। প্রায় এক মাস আগে পেঁয়াজের দাম বেশ ভালোই ছিল। বাজারে নওগাঁ ও রাজশাহী জেলার পেঁয়াজ জয়পুরহাটের হাটবাজারে আমদানি হওয়ায় দাম কমেছে পেঁয়াজের। তবে বর্তমান বাজার মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করে কৃষকদের কিছুটা লোকসান হচ্ছে।