
সাঈদ সিদ্দিক, নাটোর থেকে
বড়াইগ্রামে ড্রাগন চাষে সফল কৃষক সুরমান আলী। তার পথ অবলম্বন করে এ এলাকার শত শত বেকার যুবক এখন ঝুঁকেছেন ড্রাগন চাষে।
তিনি উপজেলার একজন আদর্শ কৃষক। ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি যথেষ্ট ঝোঁক থাকার কারনেই এ পথে আসা। সেই থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে কখনো অবসর নেয়া হয়নি তার। কাজের প্রতি বিশেষ টান থেকেই তিনি অর্জন করেছেন যথেষ্ট সাফল্য। কৃষক সুরমান আলী নাটোর জেলার বড়ইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়িয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের মৃত তাইজুদ্দিন মন্ডল এর ছেলে। তিনি সাত বছর আগে নিজের এক একর জমিতে চাষ শুরু করেন বিদেশি ফল ড্রাগনের। তবে কর্মক্ষেত্রে তিনি কৃষিকেই বেছে নিয়েছেন। আর ছোটবেলার স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেন নিজের ড্রাগন বাগানে। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ড্রাগন ফলের বাগানটি এখন তার। প্রথম অবস্থায় এক একর জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করলেও এখন ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফলফলাদির বাগানের পরিমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০-২৫ বিঘার উর্ধ্বে। এ ফল চাষের রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় খুবই কম। নানা ধরনের গোবর ও মুরগির বিষ্ঠাও প্রয়োগ করা হয়। এলাকায় ড্রাগন চাষ ছড়িয়ে দিতে অন্য সব আগ্রহীদের মাঝে বিনামূল্যে বহু চারাও বিতরণ করে থাকেন তিনি। সুরমান আলী নিজের লেখাপড়া বেশি দূর এগুতে না পারলেও তার চেষ্টা ছিল এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে কিছু একটা করার। আজ তার কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে আশে পাশের অনেক বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে চলেছে। গত সোমবার সরেজমিনে আহমেদপুরের বালিয়াগ্রামে তার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগানে গেলে দেখা মেলে,অসংখ্য নতুন ফল আসছে বাগানটিতে। এছাড়াও বাগানের মাঝে মাঝে মালটা গাছেও প্রচুর ফল দেখা মেলে। কথা হয় ড্রাগন চাষী সুরমান আলীর সঙ্গে। বাগানের সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন,আমার বাগানে এখন প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। ড্রাগনের বাগান থেকে প্রথম বছরে তেমনটি লাভ না হলেও পরের বছর থেকে ভালো লাভ পেয়েছি। আশা করছি গত বছরের চাইতে এবার ফলন ও দামটা অনেক বেশি পাবো।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ বলেন, ড্রাগন একটি ক্যাকটাস জাতীয় ফল। এই ফলটি লাল, হলুদ ও কোস্টারিকাসহ বিভিন্ন রকমের হয়। ফলটি রংয়ের কারনে অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। এতে প্রোটিন, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অত্যধিক। এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে। শরীরের চর্বি কমায়। রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ উপজেলায় দিনের পর দিন ড্রাগন চাষের উপর বেকার যুবকদের আগ্রহ বাড়ছে। যদিও বর্তমানে উপজেলা জুড়ে ড্রাগন চাষের পরিমান প্রায় ৯০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এপরিমাণ আরো অনেকগুন বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।