আমার কাগজ ডেস্ক
চলতি বছরের ২ জুন গণমাধ্যমে ‘ডেঙ্গুর আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিলো, বর্ষা আসতে না আসতে রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার উপদ্রব বাড়তে শুরু করেছে। সে সময়েই এডিস মশা দমন করা না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের সূত্রে উল্লেখ ছিলো। এ অবস্থায়, বর্ণিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবছরই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটে এবং নাগরিক জীবনে আতঙ্ক দেখা যায়। পর্যবেক্ষণে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এ বছর এ বিষয়টি প্রকটতর আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সঠিক কর্মপদ্ধতি ও সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে কার্যকরভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আগে থেকেই যথাযথ সতর্কতা ও কার্যক্রম গ্রহণ করলে ডেঙ্গু নিরসনে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কোনোপ্রকার গাফলতির সুযোগ নেই।
কমিশনের চাহিদার প্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন হতে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রেরিত প্রতিবেদন মতে, মশক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ২০২৪ সালের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, মশক নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি, মানসম্পন্ন কীটনাশক এবং কীটনাশকের পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করা হয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে মাইকিং, পোষ্টার সাঁটানো, লিফলেট বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারণা এবং এলইডি মনিটরে প্রচারণাসহ সকল প্রকার প্রচারণা চলমান রয়েছে এবং এই কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, সকল ওয়ার্ডে মশক সুপারভাইজারগণ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতামূলক জিঙ্গেল হ্যান্ড মাইকে প্রচার করছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিকে ১০ ভাগে ভাগ করে সম্মানিত কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে সকল শ্রেণী পেশার নাগরিকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাদের তত্ত্বাবধানে সর্বাত্মক মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ডেঙ্গু রোগীর তথ্য প্রাপ্তির সাথে সাথে উক্ত হোল্ডিংয়ে এবং সংলগ্ন ৩০০ গজ এলাকায় ঐ ওয়ার্ডের সম্মানিত কাউন্সিলরের নেতৃত্বে কুইক রেসপন্স টিমের মাধ্যমে মশক নিধন চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
উক্ত বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন হতে প্রাপ্ত প্রতিবেদন মতে, মশা নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে মর্মেও জানানো হয়েছে। এছাড়া মশা নিধনে নিয়োজিত কর্মী, সুপারভাইজারসহ যন্ত্রপাতি, কীটনাশকসহ মনিটরিং কমিটি, ওয়ার্ড টাস্কফোর্স কমিটি, জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা, গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।