আমার কাগজ প্রতিবেদক
প্রতারক চক্রের দুই সদস্য সিরাজুল হক ভুইয়া এবং শরীফুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
জানা যায়, একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি) সদস্যরা প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ তথ্য।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় পবিত্র হজব্রত পালন শেষে সম্প্রতি দেশে এসেছেন এক দম্পতি। দেশে আসার পর তাদের মুঠোফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানান, হজের খরচ থেকে টাকা উদ্বৃত্ত হয়েছে। ক্রেডিট কার্ড নম্বর দিলে সেটি পাঠিয়ে দেয়া হবে। হজ ফেরত ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে কার্ড নম্বর দিয়ে দেন। ওই সময় প্রতারক কৌশলে পিন নম্বরও জেনে নেয়। এরপর মূহূর্তে কার্ড থেকে মোটা অংকের টাকা সরিয়ে নেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে ভুক্তভোগী বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
জানা যায়, টানা কয়েকদিনের অনুসন্ধান শেষে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ফরিদুপরের চর কমলাপুরের নিজ নিজ বাড়ি থেকে এ দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নানা আলামত। চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকেই। অভিযান শেষে বুধবার বিকেলে আসামিদের নিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন পুলিশের দল।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (এসি) আরিফুল হোসেন তুহিন। অভিযান দলে আরো ছিলেন পরিদর্শক মতলুবুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন, হোসেন ও সাইফুল, এএসআই রাজীব এবং কনস্টেবল ফরহাদ। পুরো বিষয়টি তদারকি এবং নির্দেশনা দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার)।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, চক্রটি গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এ অপকর্ম করছে। তারা সরকারি ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়েই অপরাধের জাল বিস্তার করে। শুধু হাজীদের সাথেই প্রতারণা করেনি- বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, উপবৃত্তিসহ সরকারঘোষিত বিভিন্ন সুবিধাপ্রাপ্তদের টার্গেট করেই একের পর এক প্রতারণা করেছে। এর মধ্যে শরীফুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং গত ৩/৪ মাসে আগে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তবে এক দশক ধরে দাপটের সাথে অপকর্ম করেও অধরা ছিলেন ধুরন্ধর সিরাজুল হক।