
মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে জামায়াত আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্যকালে শফিকুর রহমান।
আমার কাগজ প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীরা কর্মক্ষেত্রে আরও নিরাপদ হবেন বলে দাবি করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা নিরাপত্তার সঙ্গে তাদের পছন্দের কর্মক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পাবেন।’
বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেছেন শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, অনেকে গুজব ছড়ায় জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মক্ষেত্রে যেতে দেবে না। স্পষ্ট করে বলছি, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের কাজের সুযোগ করে দেব। নারীরা তাদের যোগ্যতা ও যথাযথ সম্মান নিয়ে কাজ করবে। সেই সঙ্গে, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কর্মক্ষেত্রে তারা বেশি নিরাপদ থাকবে।
নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেছেন, পুরুষের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে নামাজসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়। তবে নারীদের জন্য তেমন সুযোগ-সুবিধা দেখা যায় না। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে নারীদের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা রাখতে হবে।
ডা. শফিক বলেন, শ্রমিকরা আজও ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত। ন্যূনতম মজুরি না পাওয়ায় একাধিক জায়গায় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক কারখানায় শ্রমিকরা এতো কম বেতন পান যে, ওভারটাইম করতে হয়। এই অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে হবে। একই সঙ্গে শ্রমিকরা চাঁদাবাজদের জুলুমেরও শিকার। মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষকেই একে অপরের জন্য কাজ করতে হবে। পারস্পরিক ভালোবাসার ভিত্তিতে দেশ গড়তে হবে।
জামায়াতের আমির বলেন, বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শ্রমজীবী। মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব আর চাই না। শ্রমিক বাঁচলে শিল্প বাঁচবে, ব্যবসা বাঁচবে। আবার শ্রমিককে বুঝতে হবে, শিল্প বা মালিক ধ্বংস হয়ে গেলে শ্রমিকদের কাজও বন্ধ হয়ে যাবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসলামী শ্রম নীতি ছাড়া বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত সম্ভব নয়। মালিক শ্রমিক দ্বন্দ্ব লাগিয়ে নাস্তিক্যবাদী নতুন এক ধারা তৈরি হয়েছিল দেশে।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, ১৭ বছর শ্রমিক সমাবেশ করতে পারিনি। শ্রমিকরা নির্মম বঞ্চনা, হত্যার শিকার হয়েছেন। আজ সেই সুযোগ হয়েছে। তাই এখনই সময় শ্রমিকদের অধিকার সুসংগঠিত করার।
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ও আ ন ম শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।
পল্টন মোড় থেকে বিজয়নগর মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল জামায়াতের শ্রমিক সমাবেশ। এতে হাজার হাজার শ্রমিক এবং নেতাকর্মী অংশ নেন।
এর আগে র্যালি করে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। কাকরাইল মোড় থেকে শুরু হয়ে পল্টনে গিয়ে শেষ হয় র্যালিটি।