
আমার কাগজ প্রতিবেদক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, এই সনদের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে এবং দেশ তার পূর্ণ সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারবে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলী রীয়াজ বলেন, গত ৫৩ বছরে মানুষের মনে যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা জমা হয়েছে, এখন সময় এসেছে সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার। এই উদ্যোগের মাধ্যমেই সবাই মিলে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত বা সুপারিশ যথেষ্ট নয়। রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনগণের ঐক্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুন দিশায় এগিয়ে নিতে হবে। লিখিত নথি নয়, বরং নিয়মিত চর্চা, অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলী রীয়াজ বাংলাদেশের তরুণদের অবদানকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তরুণদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ যে সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে, সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। এই পথে ঐক্য জারি রাখার তাগিদও তিনি দেন।
সংলাপ প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ জানান, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চেয়েছিল। এর মধ্যে ৩৫টি দল ইতোমধ্যে তাদের মতামত জমা দিয়েছে। কমিশন এখন পর্যন্ত ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে এবং ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ সময় তিনি ২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন। আলী রীয়াজ বলেন, এই অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়েই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন অধ্যায় সূচিত হয়। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে ঘটে যায় এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান।
সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান।