
আমার কাগজ প্রতিবেদক
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চলমান অচলাবস্থা এখনো কাটেনি। জুলাইয়ের ঘটনার পর আহত ব্যক্তিদের ছাড়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবে ঈদের ছুটি শেষে তাঁদের কেউ কেউ আবার হাসপাতালে ফিরলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১১ জুন) পর্যন্ত হাসপাতালের ২৫০ শয্যার পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে মাত্র তিনজন রোগী ছিলেন, যাঁরা সবাই জুলাইয়ের ঘটনায় আহত। এ ছাড়া ভর্তি ছিলেন না কেউ, অস্ত্রোপচারও হয়নি। শুধু জরুরি বিভাগ খোলা ছিল, যেখানে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬০ জন রোগী চিকিৎসা নেন।
দুই সপ্তাহ ধরে দেশের সবচেয়ে বড় চক্ষু বিশেষায়িত এই হাসপাতালে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে। গত ২৮ মে হাসপাতালের মধ্যে সাধারণ রোগী ও জুলাই আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সংঘর্ষের পর সব ধরনের স্বাভাবিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এর পরপরই হাসপাতালের পরিচালক ছুটিতে চলে যান।
ঈদের ছুটির আগমুহূর্তে জরুরি বিভাগ চালু হলেও পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করার জন্য আগামী শনিবার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জানে আলম মৃধা।
জানা গেছে, ছুটির আগে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৫৪ জন আহত রোগীর মধ্যে বেশিরভাগই বাড়ি চলে গেছেন, কিন্তু কেউই আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র নেননি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাঁরা আবার ফিরে আসতে পারেন।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ
আহতদের চিকিৎসা পর্যালোচনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠন করে একটি চার সদস্যের কমিটি। এতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ ও ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চক্ষুবিশেষজ্ঞরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
কমিটি ৪ জুন ৫৪ জন আহতের মধ্যে ৩০ জনের চোখ পরীক্ষা করে। বাকি ২৪ জন পরীক্ষা না করিয়ে ফিরে যান। পরবর্তীতে কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে বলা হয়—চিকিৎসা সন্তোষজনক, আপাতত ছাড়পত্র দেওয়া যেতে পারে, প্রয়োজনে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগের পরামর্শ এবং কিছু জটিল রোগীর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
আবার জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে
হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে সাধারণ রোগীর তুলনায় আহত ব্যক্তিদের সেবা দিতেই বেশি সময় ও মনোযোগ ব্যয় হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার পর উভয়পক্ষের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি আহত ব্যক্তিরা দলবদ্ধভাবে হাসপাতালে ফিরে আসেন, তাহলে পরিস্থিতি আবার অস্থিতিশীল হতে পারে।
ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, “আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছি।”