গফরগাঁও প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনের লক্ষ্যে দেশের ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দুইবছরব্যাপী বিনামূল্যে দুধ পান করানোর পাইলট কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সরকার। প্রথম পর্যায়ের ৫০টি স্কুলে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রæয়ারি থেকে কর্মসূচিটি সফলভাবে চলমান রয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)” এর অধীনে শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপদ ও পুষ্টিকর দুগ্ধজাত পণ্য প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অবশিষ্ট ২৫০টি সরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের দুধ পান করানোর পাইলট অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার (১২ জুলাই) ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সাধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওতায় স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবিদুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাদিন মালিক, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, উক্ত স্কুলে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে প্রতিদিন ২০০ মিলি UHT দুধ প্রদান করা হবে।
জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬১টি জেলার ৩০০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই পাইলট কর্মসূচি চলমান থাকবে জুন ২০২৫ সাল পর্যন্ত। নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে প্রতিদিন ২০০ মিলি দুধ খাওয়ানো হবে। মূলত একদিকে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে এবং অপরদিকে পুষ্টিবিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে এ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। পাইলট কার্যক্রম সফল হলে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হবে।
দুধ একটি আদর্শ খাবার। এর মধ্যে আছে শরীরের জন্য খুবই দরকারী শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ ও পানি। শিশুর মেধা বিকাশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ল্যাকটোজ একমাত্র দুধেই পাওয়া যায়। শরীরের বৃদ্ধি ঘটানো, শক্তি যোগানো ও মেধা বিকাশে দুধ্যের সমতুল্য আর কোন খাবার গোটা পৃথিবীতে নেই।
কর্মসূচিটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একটি সমন্বিত গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় স্কুল মিল্ক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি। উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও-এর তত্বাবধানে প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও দুধ সরবরাহকারীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে স্কুল মিল্ক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি। উভয় কমিটিই নিয়মিত দুধ পান কর্মসূচি তদারকি করবে। এলডিডিপি থেকে নিয়োজিত প্রাণিসম্পদ স¤প্রসারণ কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ ফিল্ড এ্যাসিসটেন্ট ও প্রাণিসম্পদ সার্ভিস প্রোভাইডারবৃন্দ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা করবেন। শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে এবং দুধ পানের রেজিস্ট্রার নিয়মিত হালনাগাদ ও সংরক্ষণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও অভিভাবকদের জন্য এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে আলাদা আইডি কার্ড দেয়া হচ্ছে।