আমার কাগজ প্রতিবেদক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশকিছু আলোচিত বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চেয়ে করা রিটের রুল শুনানিতে আদালত বলেছেন, ‘কেউ যেন বলতে না পারে যে, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি।’
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রুলের তৃতীয় দিনের শুনানির সময় এমন মন্তব্য করেন।
এদিন বিএনপির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সকালে শুনানি করেন। বিকেলে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহরিয়ার কবির। তিনি সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং অনুচ্ছেদ ৭(বি)সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু অনুচ্ছেদ নিয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
একপর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘এই রায়টি আমরা কলমের মাধ্যমেই লিখব। মানুষ এটি ৫০ বছর বা আরও বেশিদিন মনে রাখবে। কেউ যেন বলতে না পারে যে আমরা ন্যায়বিচার পাইনি।’
এরপর আদালত এবিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী আনা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি গত আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন।
এই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন। এই রুল শুনানির জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই রুল শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পক্ষভুক্ত হয় বিএনপি ও জামায়াত। সর্বশেষ বুধবার (৬ নভেম্বর) পক্ষভুক্ত হয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইনসানিয়াত বিপ্লব।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।