
আমার কাগজ প্রতিবেদক
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্মদিন আজ (২৬ জানুয়ারি)। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে জন্ম নেন বিএনপির এ নেতা। তার ৭৮ তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে ও দেখা করতে কারাগারে গিয়েছেন স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, মেয়ে শাফারু মির্জা সুমি এবং বোন।
বিরোধীদলীয় রাজনীতির কারণে তাকে কখনো কারাগারে আবার নেতৃত্বের মাঠে থাকতে হয়। মির্জা ফখরুল ৭৮ এ পা দিলেন কারাবন্দী থেকেই। গত বছরে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি বড় জমায়েত করে। মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোড়া টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড এর আরও রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো নয়াপল্টন। ভন্ডুল হয় বিএনপির সেই মহাসমাবেশ।
পরেরদিন সকালে তার গুলশানের বাসা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ডিবিতে আনে। এরপর মহাসমাবেশে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সব মামলা থেকে জামিন মিললেও একটি মামলায় জামিন মেলেনি মির্জা ফখরুলের।
মির্জা ফখরুলের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের রাজনীতিতে কোন মহাসচিব এতটা নির্যাতন ও হয়রানি, মামলার শিকার হননি। যেটা হয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শীর্ষ পর্যায় থেকে তিনি বেশি কারাগারে থেকেছেন। ৭৭তম জন্মদিনে তিনি আজ জালিম স্বৈরাচারের কারাগারে। জন্মদিনে তার সুস্থতা, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনা করছি।
বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, মির্জা ফখরুলের সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম , তার বোন আমেরিকা থেকে এসেছেন তিনি ও ছোট মেয়েসহ কারাগারে দেখা করতে যান দুপুরে।
দুই মেয়েকে নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাহাত আরা বেগমের সংসার। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তান নিয়ে আছেন। সেখানে সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরিয়াল ফেলোশিপ নিয়ে এখন ক্যানবেরার ফেডারেল মেডিকেল কাউন্সিলের সিনিয়র সাইন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। আর ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ঢাকার ধানমন্ডির ‘স্যানি ডেল’ স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে শিক্ষাকতা পেশায় যোগ দেন। তিনি ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।
১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন মির্জা ফখরুল। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হন।
মির্জা ফখরুলের বিএনপির রাজনীতির শুরুটা একেবারে তৃণমূল থেকে। প্রথমে ১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি দিয়ে। পরে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে মির্জা ফখরুল সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, ২০১১ সাল থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পুর্ণাঙ্গ মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি।
বিএনপির শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতৃত্বে আসার আগে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহ-সভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন দীর্ঘদিন।
ঠাকুরগাঁও আসনে বিএনপি থেকে দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি এবং এবং প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে উপ প্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিবও ছিলেন।