
আমার কাগজ প্রতিনিধি
এক বছর পরে বরগুনার আমতলী-ঢাকা নদীপথে চারটি যাত্রীবাহী চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ২৬ মার্চ থেকে পর্যায়ক্রমে লঞ্চগুলো চলাচল করবে।
এমভি ইয়াদ-৭ লঞ্চের মালিক মামুনুর রহমান জানান, ঈদে যাত্রী সেবার কথা মাথায় রেখে লঞ্চ সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মালিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে আমতলী-ঢাকা রুটে পর্যায়ক্রমে এমভি সুন্দরবন-৭, এমভি ইয়াদ-৭, এমভি ইয়াদ-৩ ও এমভি শরীয়তপুর-৩ লঞ্চ চলাচল করবে।
এদিকে পটুয়াখালী জেলার ছয় রুটে প্রতিদিন ২২টি লঞ্চের রুট পারমিট থাকলেও চলাচল করছে মাত্র চারটি লঞ্চ। তবে এবারের ঈদে যাত্রীদের চাপ বাড়লে আগামীকাল থেকে এসব রুটেও বিশেষ সার্ভিস চালুর কথা আছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর আগে আমতলী, বরগুনা, তালতলী, কলাপাড়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত কয়েক লাখ মানুষ লঞ্চে চলাচল করত। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে পড়ে। এতে পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের অনেক রুটে লঞ্চ সেবা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বরগুনার আমতলী-ঢাকা রুটে শুধুমাত্র ঈদ উপলক্ষে লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়। চলতি বছরেও ঈদ উপলক্ষে আমতলী-ঢাকা পথে লঞ্চ সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন আমতলীর হলদিয়া গ্রামের লিমন গাজী। তিনি জানান, পরিবার পরিজন নিয়ে সড়কপথে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ। শুনেছি ঈদ উপলক্ষে লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে। তাই ভাবছি লঞ্চেই গ্রামে যাব।
তিনি বলেন, ‘লঞ্চে যেতে সময় বেশি লাগলেও নিরাপদ ও আরামদায়ক। তবে দীর্ঘদিন পর লঞ্চ সার্ভিস চালু হচ্ছে, তাই লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তার বিষয়টি যাচাই বাছাই করে নিতে হবে।’
এমভি ইয়াদ-৩ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ মো. রাহাত তালুকদার বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমতলী-ঢাকা নদী পথে লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে। ইতোমধ্যে কেবিন বুকিং চলছে। তবে, যাত্রীর চাপ কম। ঈদ ঘনিয়ে এলে যাত্রীর চাপ বাড়বে।’
এমভি ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুনুর রহমান বলেন, যাত্রী সেবার কথা বিবেচনা করে ঈদ উপলক্ষে আমতলী-ঢাকা নদী পথে ৪ লঞ্চ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে এমভি ইয়াদ-৭ লঞ্চ আমতলীর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
বরগুনা বিআইডাব্লিউ সহকারী পরিচালক নির্মল কুমার রায় বলেন, ‘লঞ্চ চালুর বিষয়টি কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন। যাত্রীদের সকল সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
এদিকে পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে প্রতিদিন পাঁচটি করে লঞ্চ চলাচলের কথা থাকলেও যাত্রীর চাপ কম থাকায় মাত্র একটি করে লঞ্চ চলাচল করছে। একইভাবে ঢাকা-কলাপাড়া ও ঢাকা-চরমোন্তাজ রুটে তিনটির জায়গায় একটি করে, ঢাকা-কালাইয়া রুটে চারটির জায়গায় একটি লঞ্চ চলাচল করে। তবে ঢাকা-গলাচিপা রুটে চারটি ও ঢাকা-রাঙ্গাবালী রুটে তিনটি লঞ্চের রুট পারমিট থাকলেও, এ রুট দুটিতে কোনো লঞ্চ চলাচল করে না।
জানতে চাইলে পটুয়াখালী নদী বন্দর কর্মকর্তা মো. জাকী শাহরিয়ার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চ যাত্রীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। গতকাল পটুয়াখালী থেকে সুন্দরবন-১৪ লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে সেখানে শতাধিক কেবিনের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫টি বুকিং ছিল। আর প্রায় তিনশ যাত্রী ধারণক্ষমতার ডেকে মাত্র ৩০-৪০ জন যাত্রী ছিল।’
তবে যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চের সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।