আমার কাগজ প্রতিবেদক
গত ১৫ অক্টোবর গণমাধ্যমে ‘সরকারি হাসপাতালে ইনজেকশনের পর অসুস্থ ৩০ রোগী’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। ইনজেকশন দেওয়ার পর রোগীর শরীরে বিরূপ প্রভাব বা জটিলতা দেখা দেওয়ায় বর্ণিত ঘটনাটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত। উক্ত ঘটনায় পরিলক্ষিত হয় যে, বিভিন্ন রোগের সমস্যা নিয়ে ভর্তিরত রোগীদের শরীরে নির্দিষ্ট দুইটি গ্রুপের ইনজেকশন দেওয়ার পর তাদের শরীরে প্রতিকূল প্রভাব দেখা দেয়। ফলে তারা গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পরে এবং অন্যান্য রোগীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে কমিশন আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং এতে চিকিৎসা সেবা প্রার্থীদের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। রোগীর সেবায় ব্যবহৃত উক্ত ইনজেকশনসমূহে কোনো ত্রুটি বা মেয়াদ উর্ত্তীণ ছিল কি-না কিংবা প্রয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা আবশ্যক। স্বাস্থ্যখাতে এ ধরনের ঘটনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ঘটনায় দেশ রূপান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, শেরপুর সদর হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের ইনজেকশন দেওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও রোগীর স্বজনরা জানান। গত ১৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ রবিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কী কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটল, তা এখন শনাক্ত করা যায়নি। ১৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ সোমবার শেরপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কমপক্ষে ১২ রোগীকে শ্বাসকষ্টের কারণে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। ইনজেকশন নেওয়া অন্য রোগীদের খিঁচুনি, পেটব্যথা, মাথাব্যথা, বমিসহ বেশ কিছু উপসর্গ ছিল। হাসপাতালে কর্তব্যরত কয়েকজন নার্স জানান অ্যান্টিবায়োটিক গ্রুপের সেফটিয়াক্সজম ও প্যান্টিট নামে দুটি ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকেই রোগীরা অস্থিরতা, পেটব্যথা, খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। পরে কর্তব্যরত ডাক্তাররা এসে রোগীদের চিকিৎসা দিতে শুরু করেন। কমপক্ষে তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বর্ণিত প্রেক্ষাপটে আদেশ হয় যে, এ ঘটনায় অসুস্থদের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি নির্ণয়সহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিভিল সার্জন, শেরপুর-কে বলা হোক। আদেশের অনুলিপি জ্ঞাতার্থে সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক, শেরপুর বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ প্রতিবেদনের জন্য ধার্য করা হয়েছে।