![](https://amarkagoj.com/wp-content/uploads/2023/11/image-253768-1700593518bdjournal.jpg)
আমার কাগজ প্রতিবেদক
টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগে স্বভাবতই বাড়ছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। গ্রুপিং-সাব গ্রুপিংয়ে জর্জরিত দলটি। অন্তর্কোন্দলের ফলে নানা জায়গায় সংঘাতেরও ঘটনা ঘটেছে অনেক। এর মধ্যেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩ হাজার ৩৬২ জন। সে হিসাবে ৩০০ আসনের প্রতিটিতে গড়ে ১১ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
এত সংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশী তৃণমূলে বিভাজন ও দ্বন্দ্বের কারণ হবে কি না- এমন প্রশ্ন ছিল দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।
জবাবে তারা বলছেন, বিষয়টি ইতিবাচক। নেতিবাচক মনে করার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য হলো, দলীয় স্বার্থ ও সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও তাই হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিষয়টি ইতিবাচক। নেতিবাচক মনে করার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য হলো, দলীয় স্বার্থ ও সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও তাই হবে।
মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য খোকন মাহমুদ নির্ঝর বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। যোগ্য, সৎ, একনিষ্ঠ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীর অভাব আমাদের নেই। আমরা সবসময় চাই দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। এটাই হলো বড় ও জনপ্রিয় দলের নমুনা। বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত।
এবার ঢাকা বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৭৩০টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। আর চট্টগ্রাম থেকে ৬৫৯টি, রাজশাহী থেকে ৪০৯টি, খুলনা থেকে ৪১৬টি, রংপুর থেকে ৩০২টি, ময়মনসিংহ থেকে ২৯৫টি, সিলেট থেকে ১৭২টি এবং বরিশাল থেকে ২৫৮টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।
যদিও পরিসংখ্যান বলছে, একাদশের চেয়ে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কম বিক্রি হয়েছে। এবার ৩০০ আসনের বিপরীতে ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হলেও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ২৩টি। সে হিসাবে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম আগের বারের চেয়ে ৬৬১টি কম বিক্রি হয়েছে।
ফলে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেখানে প্রতি আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন ১৩ জন। সেখানে এবার গড়ে প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১ জন। কিন্তু প্রার্থী কমলে আগের চেয়ে এবার দলটির মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আয় বেশি হয়েছে। এবার মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ফরমপ্রতি দাম ছিল ৫০ হাজার টাকা। আর ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়ন ফরমের দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা। দলটি তখন আয় করেছিল ১২ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
আগামী ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নৌকার প্রার্থী হতে গত ১৮ নভেম্বর থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ওইদিন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নিজের ফরম কিনে এর উদ্বোধন করেন। এরপর টানা চারদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেয়ার কার্যক্রম চলে। মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেয়ার শেষদিন।
শেষদিনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এছাড়া, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ বেশকিছু আলোচিত ও জনপ্রিয় মুখও শেষদিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত তিনদিনের চেয়ে শেষদিনে উত্তোলনের চেয়ে জমাদান ছিলো চোখে পড়ার মতো।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) মনোনয়ন বোর্ডের সভায় চূড়ান্ত করা হবে ৩০০ আসনে কারা হবেন নৌকার প্রার্থী।