বিনোদন প্রতবেদক
দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আর ফেরা হলো না। আজ সকাল ছয়টায় রাজধানীর কল্যাণপুরের বাসায় মারা গেছেন অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।) তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিনয়শিল্পী মনিরা আক্তার মিঠু।
অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে নিয়মিত আফরোজার কথা হতো অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর সঙ্গে। সময় পেলেই ছুটে যেতেন সহকর্মীকে দেখতে। যেতে না পারলে প্রায়ই কথা হতো মুঠোফোনে। আজ সেই প্রিয় সহকর্মীকে শেষবারের মতো দেখতে পারলেন না তিনি। এই অভিনেত্রী টাঙ্গাইলে একটি শুটিংয়ে রয়েছেন।
টাঙ্গাইল থেকে শোকবিহ্বল এই অভিনেত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জরায়ু ক্যানসার থেকে আফরোজা আপার ক্যানসার ফুসফুসে পর্যন্ত চলে যায়। যার চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। তিনি একাধিকবার ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যয় অনেক বাড়তে থাকে। হাসপাতালেই ছিলেন, ১৫ দিন ধরে তিনি বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।’
জানা যায়, দুই বছর আগে তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে। পরে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিলেও পরে তিনি মুম্বাইয়ে চিকিৎসা নিতে যান। গত বছর শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তিন মাস ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। এ সময় তাঁর চিকিৎসার জন্য অনেকেই এগিয়ে আসেন।
২০০৮ সালে প্রথম অভিনয় শুরু করেন আফরোজা হোসেন। ইউনেসকোর সচেতনতামূলক নাটক দিয়ে তাঁর পথচলা শুরু হয়। এটি দুই বছর বিটিভিতে প্রচারিত হয়। তখন তিনি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করতেন। চাকরির ফাঁকে করতেন অভিনয়। তিনি মামুনুর রশীদ, জাহিদ হাসান, মাহফুজুর রহমান, কচি খন্দকারসহ অনেকের নির্মিত নাটকে অভিনয় করতে থাকেন।
২০১৩ সালে আফরোজা সিদ্ধান্ত নেন, শুধু নাটকেই অভিনয় করবেন। সেই থেকে চাকরি ছেড়ে টানা অভিনয়ে। তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘আবার বসন্ত’ সিনেমায় অভিনয় করে।
এ ছাড়া ‘ঠেটারু’, ‘সূর্য অস্তের আগে’, ‘বিদেশি ছেলে’সহ একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। নাটকের চেয়ে তিনি ইউনেসকো, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি ও বিবিসির তথ্যচিত্রে বেশি নাম লিখিয়েছেন।
অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন দুই ছেলে রেখে গেছেন। বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা শেষে এখন চাকরি করছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, কল্যাণপুর হাউজিং সোসাইটিতে তাঁর জানাজা হয়েছে। কোথায় দাফন হবে, সেটা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।