
আমার কাগজ প্রতিবেদক
রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে বিরোধের জেরে দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার পর অবরোধ তুলে নিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা।
জানা গেছে, ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্ট একটি পিকআপে লুকিংগ্লাস না থাকায় কাগজপত্র যাচাই করেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য পিকআপ চালককে মারধর করেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যেই হাতাহাতি হয়।
অবস্থা বেগতিক দেখে গাবতলীতে দায়িত্বরত সব পুলিশ সদস্য ওই এলাকা ত্যাগ করেন। পরিবহন শ্রমিকরা তখন রাস্তার ওপর আড়াআড়ি গাড়ি রেখে অবরোধ করেন।
অবরোধের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গাবতলী হয়ে কোনো গাড়ি যেতে পারেনি, ওই পথে কোনো গাড়ি রাজধানীতে ঢুকতেও পারেনি।
নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই প্রবেশ পথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ে রাজধানীর বড় এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকার সড়কে ভয়াবহ যানজটের খবর আসতে থাকে।
পরে পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বেলা সাড়ে ১২টার পর আবার গাবতলী হয়ে যান চলাচল শুরু হয় বলে ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার বিমল চন্দ্র বর্মন জানান।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস উদ্দিন বলেন, “শুনেছি কভার্ড ভ্যান শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছে। তাদের এক চালককে নাকি ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট চড় মেরেছিল।”
বিষয়টি নিয়ে সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) বিমল চন্দ্র বর্মন বলেন, একটি পিক-আপে কিছু ত্রুটি থাকায় মামলা করতে গেলে চালক কোনো সহযোগিতা করেনি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়। এতে আমাদের চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে রানা নামের এক সার্জেন্ট গুরুতর আহত, তাকে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে আমরা সুরাহা করেছি। সাড়ে ১২টায় গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে মিরপুর ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ইয়াসমিনা ফেরদৌস বলেন, একটি পিকআপের লুকিংগ্লাস নষ্ট ছিল। চালককে সিগন্যাল দিয়ে তার গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান একজন সার্জেন্ট। এতে চালক ক্ষুব্ধ হয়ে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। পরে গাবতলী থেকে আরও পিকআপ চালক এসে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে পিকআপ চালক ও শ্রমিকরা মিলে গাবতলী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। অবরোধের ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্য ও অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে দুপুর ১২টার পর অবরোধ তুলে নেন তারা।
ইয়াসমিনা ফেরদৌস আরও বলেন, বর্তমানে সড়ক অবরোধ নেই। তবে দীর্ঘক্ষণ অবরোধের ফলে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।