মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাশকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর হুমকি দেওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ওই কর্মকর্তা এ ঘটনায় কোথাও লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান বলেন, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তাকে বিষয়টি বোঝাতে ফোন করা হয়েছিল।
অডিও রেকর্ডে আবদুল মান্নানকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি অলোক কুমার দাশ, বাইরে থেকে এসে বাড়িঘর তৈরি করে খুব আরামেই আছ। পয়সা অনেক কামাই করেছ। আমি কিন্তু যেমন ভালো লোক, তেমন খারাপ লোক। তোমাকে কোনো মন্ত্রী প্রমোশন দেয়নি। বাংলাদেশ সরকার তোমার প্রমোশন করে দিয়েছে। মন্ত্রীকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে যদি আর একটা কথা শুনি, তাহলে আমি এমপি হই আর না হই, তোমার মেহেরপুরে বসবাস করা উঠিয়ে দেব। আর তুমি যদি সাবধান হয়ে যাও, তাহলে আমার প্রিয় হয়ে থাকবে। ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের অডিওতে আবদুল মান্নান মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অলোক কুমার দাশকে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অলোক কুমার দাস বলেন, আমার ফোনে অটোকল রেকর্ডিং হয়। বিগত ১৭ ডিসেম্বরও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান পরিচয়ে কল করলে আমি কলটি রিসিভ করি। কলটি রিসিভ করেই তিনি আমাকে তার পরিচয় দিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ বিষয়টি আওয়ামী দলীয় প্রার্থী ফরহাদ হোসেনকে জানানো হয়। তিনি অডিওটি আমার কাছে চেয়েছিলেন। অডিওটি তাকে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ফরহাদ হোসেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসানকে বিষয়টি জানান। রিটার্নিং কর্মকর্তা অডিওটি মেহেরপুরের দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি মো. কবির হোসেনকে দিয়েছেন বলে শুনেছি।
আলোক কুমার দাস আরও বলেন, ‘আমি কোনো ঝামেলায় পড়তে চাইনি। এ কারণে কাউকে কোনো অভিযোগ জানাইনি। আমি শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেনকে বিষয়টি জানিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান জানান, অলোক কুমার দাস একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সারাদিন প্রতিমন্ত্রীর বাসায় বসে থাকেন। অলোক কুমার দাস নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। এ কারণে অলোককে বোঝানোর জন্য ফোন দিয়েছিলেন। অডিওটি কাটছাঁট করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ কাজ করা হয়েছে।