আমার কাগজ প্রতিবেদক
সুইস ব্যাংকগুলো থেকে বাংলাদেশিদের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া নিয়ে রহস্য ঘনিভূত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার পরিবার নিয়ে সুইজারল্যান্ড সফরের পরপরই দেশি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমগুলোতে খবর বেরিয়েছে— সুইস ব্যাংকগুলোতে রাখা বাংলাদেশিদের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে রহস্য ঘনিভূত হচ্ছে ’।
তিনি বলেন, ‘এই টাকাগুলো এক বছরে কারা সরিয়েছে? এটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে মানুষের মনে। কারণ একচেটিয়া টাকা পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তারা সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। আওয়ামী লুটেরাই যে সুইস ব্যাংক থেকে সাড়ে দশ হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই’।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ভয়াবহ ডলার সংকটের সময়ে বিশাল বহর নিয়ে শেখ হাসিনা ঘন ঘন বিদেশ সফর করছেন। সম্প্রতি তার সুইজারল্যান্ড সফর খুবই রহস্যজনক। সফর করে ফিরে এসে তার কথাবার্তাও রহস্যজনক।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘লুন্ঠিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করবে, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবে। মাফিয়া সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না। রাজপথ দখলের জন্য সকলকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগের জমিদারী শাসনের দিন শেষ। দেশের জনগণ এখন রাগ—ঘৃণা ও প্রতিবাদের আগ্নেয়গিরি হয়ে আছে। শেখ হাসিনার অনাচার চলতে থাকলে যেকোন সময় প্রতিশোধের অগ্ন্যুৎপাতের মহাপ্লাবন বয়ে যাবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা সার্বভৌমত্ব দুর্বল করেছে, স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে, গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করেছে। এরা তাদের নিজেদের প্রহসনের নির্বাচনেও স্বস্তি পায় না। উচ্চ আদালত হিরো আলমের প্রার্থিতা বৈধতার রায় দিলেও নির্বাচন কমিশন জনবিচ্ছিন্ন সরকারের ইশারায় আলমের প্রার্থিতা বাতিল করে। এই তামাশার নির্বাচনের মধ্যেও অবৈধ সরকারের অনৈতিক চাপ দৃশ্যমান। এরা গণতন্ত্রের সকল স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
এ সময় সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হামলার চিত্র তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘গত ১৯ মে থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী মোট মামলা হয়েছে ২১০টি, গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮৩০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে, আসামী করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৩’শ এর অধিক নেতাকর্মীকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরাফত আলী সপু, আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।