সাভার প্রতিনিধি
সাভারে মাদক কারবারিদের তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়ে দেয়ায় সীমা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে এক মাদক কারবারিকে আটক করার পর তাঁর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এর আগে, গত রোববার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকার নিজ ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজ হন নিহত সীমা আক্তার। এর দুদিন পর গত মঙ্গলবার সীমা বেগমের মেয়ে তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
নিহত সীমা আক্তারের (৪০) গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার মুন্সি কাদিরপুর এলাকায়। তাঁর স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর খান। বর্তমানে তিনি সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকায় মো. শাহীন মিয়ার বাসায় ভাড়ায় থাকেন।
গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারি সাইফুল ইসলাম সাভারের ইমান্দিপুর এলাকার বাসিন্দা।
মামলা দায়েরের পর ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশিরা হাবীব খানের নেতৃত্বে অভিযানে নামে ঢাকা জেলা (উত্তর) শাখার (ডিবি) পুলিশ এবং সাভার মডেল থানা পুলিশ। পরে আজ সকালে সাভারের বিরুলিয়া এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সাইফুল জানায় তিনিসহ আরও ৪-৫ জন মিলে সীমাকে হত্যা করে মরদেহ মাটি চাপা দিয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খনিজনগর এলাকার স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় নিহত সীমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সীমার মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, আমার মা নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন আগে আমাকে ফোন করে জানায় স্বপন মানুষ ভাড়া করছে মাকে মারার জন্য। স্বপনের বাসা, যেখানে লাশ পাওয়া গেছে তার কাছেই। মানুষের কাছে শুনি স্বপনের বউকে গ্রেপ্তারে নাকি পুলিশকে আমার মা সহযোগিতা করেছিল। তাই স্বপন আমার মাকে মেরে ফেলছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশ শিরা হাবীব খান বলেন, সীমা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ঢাকা জেলা উত্তর ডিবি পুলিশ ও সাভার মডেল থানা পুলিশ যৌথভাবে কাজ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সীমাকে হত্যা করে মরদেহ মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান। গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় সীমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েজনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো সুনির্দিষ্ট নয়। এবিষয়ে তদন্ত চলছে।
গত ১৩ মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকা থেকে বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল হামিদ ও স্থানীয় স্বপনের স্ত্রী পপি আক্তারকে (২০) গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।