আমার কাগজ প্রতিবেদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের ৬ সদস্যের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) প্লট বরাদ্দে অনিয়ম তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, আইনজীবী জসিম উদ্দিন সরকার ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন এ কমিটিতে থাকবেন।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রুলসহ এ আদেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী আবেদনকারী হয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন। রিট আবেদনকারী ওই ১০ আইনজীবী হলেন- মো. রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, মো. গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, মো. বেলায়েত হোসেন সোজা, কামরুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান, মো. জিল্লুর রহমান ও ইসমাইল হোসেন।
রাজউকের প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দের বৈধতা নিয়ে করা এই রিটে বিষয়টি তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিট আবেদনে এসব বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত ও সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার প্রার্থনা করা হয়।
গতকাল বুধবার রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ আদেশের জন্য দিন রাখেন হাইকোর্ট। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করে আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১২০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিবকে আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকার পতনের পর অভিযোগ ওঠে রাজউকের আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে স্বয়ং নিজের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তিনি একা নন, প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এছাড়া প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের তালিকায় আছেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলেমেয়ে।
জানা যায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে তাদের প্লট দেয়া হয়। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন।