রাশিয়ার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সিরিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন করে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় গত জুনে সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তার এক মাসের মধ্যেই ইউক্রেনের সঙ্গে যাবতীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতি টানল সিরিয়া। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বুধবারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘(ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টর সতর্কবার্তার) পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সিরিয়ান আরব রিপাবলিক ইউক্রেনের সঙ্গে যাবতীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে সিরিয়ার আর কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সিরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল ২০১৮ সালেই। ওই বছর রাজধানী কিয়েভে সিরিয়ার দূতাবাস কর্মীদের আবাসনের অনুমোদন নবায়ন বা হালনাগদ করতে আপত্তি জানিয়েছিল জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন সরকার।
‘তাদের এই বৈরী আচরণের জন্য দূতাবাসকর্মীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল,’ আলজাজিরাকে বলেন ওই কর্মকর্তা।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সার মেকদাদ বর্তমানে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সফরসঙ্গী হিসেবে তেহরানে আছেন। সেখানে রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বর্তমানে অবস্থান করছেন তেহরানে ।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার ১৫১তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
এদিকে এই অভিযানের শুরু থেকেই রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করে সিরিয়া; সেই সোভিয়েত আমল থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশটি রাশিয়ার বিশ্বস্ত মিত্র।
যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে সমর্থন দিতে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধাও পাঠিয়েছে সিরিয়া।