
হাওর অঞ্চল প্রতিনিধি
হাওর অঞ্চলে প্রায় সকল প্রকার নিত্যপণ্যের দাম সাধ্যের মধ্য থাকায় চলতি রমজানে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে নেই তেমন একটা হাহাকারের চিত্র। প্রশংসিত হচ্ছে তদারকির দায়িত্বে থাকারা। তদারকির দায়িত্ব থাকারা বলছেন এই অবদান সরকারের।
হাওরাঞ্চলের অসংখ্য বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সাথে কথা হলে তাদের যুক্তি ও অভিমত প্রকাশ করেছেন একমাত্র সঠিক তদারকির কারণে বাজার মূল্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। রমজানে দ্রব্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়নি হাওর অঞ্চলের সাধারণ ক্রেতাদেরকে। বিপরীতে বিক্রেতাদের ভাষ্য চলতি মৌসুমে শীতকালীন বাম্পার ফলনের পরেও সব কিছু দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। যদিও শীতের মাঝামাঝিতে কয়েকদিন সবজির দাম ছিলো তুলনামূলক কম। তবে সাম্প্রতিক রমজানে সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। শুধু অভিযোগ রয়েছে হাওর অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় রমজানের শুরুর দিকে দুধের দাম নিয়ে।। রমজানের শুরুর কিছুদিন পর থেকে তুলনামূলক দুধের দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও পুরোপুরি এখনো নিয়ন্ত্রণ আসেনি। এখনো প্রায় দ্বিগুণ। তবে স্থানীয় ভোক্তা অধিদপ্তর ও তদারকির দায়িত্বে থাকারা দাবি করে চলেছেন এসবও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
হাওর অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় জনগনের ভাষ্যমতে কেয়ারটেকার সরকার অর্থনৈতিক দিকসহ নানামুখী সমস্যার মধ্যে থেকেও রমজানে প্রায় সকল ধরণের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় লিপ্ত থাকার ফলে প্রশংসিত হয়েছে। যদিও কিছু কিছু বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছু অসংখ্য ক্ষেতাবিক্রেতাদের বলতে শোনা যাচ্ছে বিগত রমজান মাসে তরমুজসহ বিভিন্ন ধরণের ফলের বাজার মুল্য আকাশ ছোঁয়া উর্ধ্বগতির মতোই ছিলো। চলতি রমজানে সাধ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় সব কিছুই। তবে লেবুসহ কিছু কিছু ফলমূলের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও তেমন একটা প্রভাব পড়েনি চাউল, ডাল, মাছ-মাংস, তৈল, ছানা আটা ময়দাসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের উপর।
তারা আরও যুক্তি তোলেন অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বন্ধ হলেই সাধ্যের মধ্যে থাকবে জনগণের সকল প্রকার ক্ষয়ক্ষমতা।
জীবিকার উদ্দেশ্যে হাওর অঞ্চল ছেড়ে শহরে বসবাসকারীদের ভাষ্য, চলতি রমজানে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রশংসার দাবিদার। সেক্ষেত্রে পরিবহন সেক্টর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হলে সরকার আরও প্রশংসিত হবে। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া ও ভোগান্তির দিক মাথায় রেখে তদারকির বিষয় জোরদার করা হলেই সফলতা সম্ভব বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নিকলী উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আব্দুল বাতেন জানান, নিয়মিত মূল্য তালিকা হাল নাগাদ ও সঠিক তথ্য উপস্থাপনের লক্ষ্যে প্রশাসনের চেষ্টার কোনো ধরণের ত্রুটি নেই বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি কৃত্রিম সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে নানাবিধ চেষ্টা অব্যাহতের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য বিষয়েও প্রশাসনের নজরদারির কোনো ঘাটতি নেই বলে জানান।
জেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক সংকর চন্দ্র পাল বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ থেকে রমজান পর্যন্ত শুধু ভৈরব ও সদর উপজেলা থেকেই ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে সঠিক খাদ্য পরিবেশনের লক্ষ্যে সমগ্র জেলা জুড়েই।
কিশোরগঞ্জ জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, রমজানের আগ মুহ‚র্ত সরকারের নির্দেশ মোতাবেক সারাদেশের ন্যায় তারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলেছেন বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে। সরকার এ কৃতিত্বের দাবিদার বলেও তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ ও মজুদের দিকে পুরোপুরি নজরদারিতে ছিলো বলেই এ রমজানে হাওরাঞ্চালেও কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়নি।