আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ নেই। বরং মোদি-বাইডেন বৈঠকে গুরুত্ব পেতে পারে ইউক্রেন ইস্যু। এমনটাই জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি।
সাংবাদিকদের জন কিরবি বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হবে। এ সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কিরবি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আগেই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
এ বিষয়ে মার্কিন ভিসা নীতিও প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান জন কিরবি। এ ছাড়াও মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সরব ভূমিকা পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন জন কিরবি।
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো একে মেগা সফর আখ্যা দিয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে ওয়াশিংটনের চীনবিরোধী অবস্থান আর এশিয়ার ভূ-রাজনীতি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ভারতের কাঁধে ভর করে স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন মোদি।
নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের দিকে তাকিয়ে এখন গোটা বিশ্ব। নজর রাখছে বাংলাদেশও, বলছে বেশকিছু ভারতীয় গণমাধ্যম। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র নতুন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে দিল্লির মনোভাব ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরবেন মোদি।
বিবিসি বলছে, মোদির সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকতে পারেন বলেও ধারণা রয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সে অঞ্চলে ভারতের প্রভাব আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করবেন মোদি-বাইডেন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত জরুরি। আর যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, বলছে গ্লোবাল টাইমস।
ইউএস-ইন্ডিয়া পলিসি স্টাডিজ চেয়ার কূটনীতিবিদ রিচার্ড রোসো জানিয়েছেন, ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধে জড়িত চীন। এ ছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার ও তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনায় এই অঞ্চলে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। এ অবস্থায় বাইডেন-মোদির ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়িয়েছে ভারত। সস্তায় রুশ তেল কিনছে বিপুল পরিমাণে। যা পশ্চিমাদের হতাশার কারণ। সেই রাশিয়ার কাছ থেকেও ভারতকে দূরে সরাতে চায় ওয়াশিংটন।
রিচার্ড রোসো আরও বলেন, রাশিয়ার সাথে সম্প্রতি ভারতের যোগাযোগ বেড়েছে। আলোচনার টেবিলে বিষয়টি উঠে আসবে। তবে এটি বড় কোনো ইস্যু নয়। এটি আলোচনাকে প্রভাবিত করতে পারবে না।
এ ছাড়া বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতীয় ভোটারদের সমর্থন পেতেও মোদির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছেন বাইডেন।