
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মুক্তিপণ দিয়েও আইয়ান সাদাবকে (৫) বাঁচাতে পারেনি পরিবার। নিখোঁজের চার দিন পর মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে স্বজনেরা বাড়ি থেকে দেড় শ গজ দূরে পুকুর থেকে ওই শিশুর লাশ করা হয়।
নিহত সাদাব হোসেন নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আল আমিনের ছেলে।
শিশুটি মায়ের সঙ্গে গফরগাঁওয়ের পাঁচবাগ ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে নানাবাড়িতে থাকত। ১১ জুলাই দুপুরে নিখোঁজ হয় সে। নিখোঁজের ঘটনায় সাদাবের নানা সুলতান মিয়া পাগলা থানায় একটি জিডি করেন।
এদিকে ১২ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে মুঠোফোনের দুটি নম্বর থেকে ৩০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় শিশুটির স্বজনদের কাছে। দুটি নম্বরের একটিতে ২০ হাজার ও অপর দিকে ৮ হাজার টাকা পাঠানো হয়।
নিহতের চাচা খলিল মিয়া জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী সোহাগ মিয়া বাড়ির পশ্চিম পাশে গরু চড়াতে গিয়ে লাশের সন্ধান পান।
সোহাগ মিয়া বলেন, ঘাস খাওয়াতে পুকুর পাড়ে গরুকে বেঁধে রাখি। কিন্তু গরু খাস না খেয়ে লাফালাফি শুরু করে। এ সময় পাশে জঙ্গল থেকে পচা গন্ধ আসে। পরে দেখি দুই জায়গায় লাশের দুটি খণ্ড পড়ে আছে। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে সাদাবের লাশ শনাক্ত করে।
নিহতের নানা সুলতান মিয়া জানান, মুক্তিপণ দিয়েও নাতিকে বাঁচাতে পারলাম না। ওরা আমার অবুঝ নাতিকে মেরেই ফেলল। তিনি আরও জানান, গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে অপরিচিতি একটি ফোন নাম্বার থেকে সাদাবের মায়ের কাছে প্রথমে ২০ হাজার এবং পরে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে দুই দফায় ৪৮ হাজার টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। অপহরণকারী আমাকে ফোনে বলেছিল টাকা পেলে নাতিকে জীবিত গফরগাঁও রেলস্টেশন রোডের জামতলী মোড় সিএনজি স্ট্যান্ডে রেখে যাবে। কিন্ত এখন নাতির লাশ পেলাম।
পাগলা থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওসি মো. ফেরদৌস আলম বলেন, শিশুটির তিন খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।