ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার রিপোর্ট বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির একটি বস্তুনিষ্ঠ বিবরণ উপস্থাপনের চেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন, এনজিও, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে নেয়া সব তথ্য বস্তুনিষ্ঠভাবে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, ন্যায্যভাবে পর্যালোচনা করে মানবাধিকার রিপোর্ট প্রণয়ন করা হয় বলে দাবি করেছে দুতাবাস কর্মকর্তারা।
গত মঙ্গলবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০২১ সালের ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিস’ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। প্রতিবেদনটিতে সরকারবিরোধী প্রপাগান্ডা থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্র শাহরিয়ার আলম।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর বুধবার ঢাকায় মার্কিন দুতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা এর প্রেক্ষিত সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন যে কোনো একক দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাইরেও ক্ষতির কারণ হয়। মানবাধিকার প্রতিবেদনে শুধু নেতিবাচক দিক নয়; মানবাধিকার রক্ষায় সরকার যা করছে তারও উল্লেখ আছে বলে জানান দুতাবাস কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদন সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, মানবাধিকারের সাতটি ক্ষেত্রের প্রতি নজর দেয়া হয়। ১. ব্যক্তির মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা, যা বিচারবহির্ভ‚ত হত্যা, গুম, নির্যাতন ও বিধিবহির্ভূত গ্রেফতারের সঙ্গে সম্পর্কিত; ২. নাগরিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা, যা বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন ও বিধিবহির্ভূত গ্রেফতারের সঙ্গে সম্পর্কিত; ৩. রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের স্বাধীনতা; ৪. সরকারের দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার অভাব; ৫. মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি তদন্তের প্রতি সরকারের মনোভাব; ৬. বৈষম্য ও সামাজিক হয়রানি যার মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু, যৌন ও লৈঙ্গিক সংখ্যালঘু, জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার; এবং ৭. শ্রমিক অধিকার, যার মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশের অধিকার এবং জোরপূর্বক শ্রম, শিশু শ্রম ও নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিষিদ্ধ করা।
সাংবাদিকরা যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললে দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবাধ গণমাধ্যম রয়েছে। আমরা আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি না। কংগ্রেসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি কড়া নজরদারির মধ্যে রাখে।