রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সকালে ঢামেক মর্গের সামনে প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মেয়ে হত্যার বিচার চাই না। মামলা চালানোর মতো অবস্থাও নেই। আমরা নিরীহ মানুষ। বিচার চাইলে আল্লাহর কাছে চাই। তিনিই বিচার করবেন।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রীতিদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। সেখানে যাতায়াত কম। বাবার চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকে তার পরিবার।
জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মিরপুর-২ এ একটি কোম্পানির ফ্যাক্টরির প্রডাকশনে চাকরি করি। বেতন বেশি পাই না। অনেক কষ্টে মেয়ে প্রীতি ও ছেলে সোহায়েব জামাল সামি ও স্ত্রীকে নিয়ে পশ্চিম শান্তিবাগের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকি।’
মেয়ে হত্যার বিচার চান কিনা ও মামলা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলা করবো না। মামলা পরিচালনা করার মতো অবস্থা ও সুযোগ আমার নাই৷ কোনো বিবাদে জড়াতে চাই না। কেউ যদি সহযোগিতা করে সেটা ভিন্ন বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে। পরিবারের অবস্থা বিবেচনা করে প্রীতি নিজে চাকরির চেষ্টা করছিল৷ ১৫ হাজার টাকায় একটা অফিসে চাকরি নিয়েছিল। সামনের মাসে জয়েন করার কথা ছিল মেয়েটার। কিন্তু সেটা আর হলো না।’
তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে বাবাকে হারিয়েছে স্ত্রী হোসনে আরা। রাতে মেয়েকেও হারাল। স্ত্রীকে কোনো কিছু বলে বোঝানো যাচ্ছে না। সন্তানহারা স্ত্রীর মুখের দিকে তাকাতে পারছি না।’
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু (৫৮)। একই ঘটনায় নিহত হন সড়কে যানজটে আটকা পড়ে রিকশায় বসে থাকা সামিয়া।
সারাদিন বান্ধবী সুমাইয়ার খিলগাঁওয়ের বাসায় ছিলেন সামিয়া। রাতে বাসায় ফিরছিলেন। পথে খবর পান মামা এসেছেন বাসায়। নিজেদের দুই রুমের বাসা, থাকায় সমস্যা মনে করে পুনরায় বান্ধবীর সঙ্গে খিলগাঁওয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। পথে গুলিবিদ্ধ হন প্রীতি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবার প্রীতির মৃত্যুর খবর পান রাত ১২ টার দিকে।