চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রাম এলাকায় ডাকাতিয়া নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় মাটিবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে ট্রলারে থাকা মাঝিসহ ১১ জন শ্রমিকের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হন। বাল্কহেডের চারজন শ্রমিককে আটক করেছে চাঁদপুর নৌ থানা পুলিশ।
সোমবার পৌনে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল চেষ্টা চালিয়ে শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার করে।
মৃত শ্রমিকরা হলেন- কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর থানার বহরা গ্রামের মোবারক হোসেন (৫৫), একই এলাকার মাদবপুর গ্রামের আল আমিন (৩৫), তিতাস থানার ধুলারাসপুর এলাকার চাঁনপুর গ্রামের মো. নাছির উদ্দিন (৩৫), ট্রলারের মাঝি মুরাদনগর থানার রঘুনাথপুরের মো. আউয়াল (৬৫) ও কুমিল্লা তিতাস থানার রঘুনাথপুর গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম কালা (৪০)।
জীবিত শ্রমিকরা হলেন- কুমিল্লা তিতাস থানার মো. আবুল কাশেম, মো. ইউনুছ, মো. ফরিদুল ইসলাম ও মো. জলিল, মুরাদ নগরের আল-আমিন ও মুরাদ নগরের মো. দেলোয়ার।
আটকরা হলেন- মো. জাবেদ, আবুল বাশার, মো. ইউনুস ও দিদার। তারা সবাই ইকবাল হোসেন-১ নামক বালুবাহী বাল্কহেডের শ্রমিক।
বাগাদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মমিনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, সকাল ৭টার দিকে বালুবাহী বাল্কহেডটি চাঁদপুর থেকে বালু নিয়ে হাজীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল এবং মাটিবাহী ট্রলারটি বিপরীত দিক থেকে মৈশাদী এএমএস ইটভাটার মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনাস্থল মমিনপুর ডাকাতিয়া নদীর বাঁক এলাকায় বাল্কহেডের ধাক্কায় মাটিবাহী ট্রলারটি পানিতে নিমজ্জিত হয়। এতে ট্রলারে থাকা মাঝিসহ ১১ শ্রমিকের মধ্যে পাঁচজন ডুবে যায়। এর মধ্যে মাঝি আউয়ালকে প্রথমে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সেখানেই মারা যান। বাকি চারজনের লাশ ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার করে।
বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই আমাদের ইউপি সদস্যরা ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকজনকে লাশ উদ্ধার কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। আমি নিজেও ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়েছি। রাতের বেলায় এই নদীতে ঝুঁকি নিয়েই বালুবাহী বাল্কহেড চলা ফেরা করে। শীত মৌসুমে কুয়াশার মধ্যে আরো বেশি ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে নদীর বাঁক ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনা বেশি হয় এবং ইটভাটার মাটি কাটার নৌকাও বৃদ্ধি পায়।
চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উত্তরের উপসহকারী পরিচালক মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমাদের ডুবুরি দল চারজন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছেন এবং একজনের লাশ উদ্ধারের পর হাসপাতালে মৃত্যু হয়। ছয়জন ঘটনার পর পাড়ে উঠতে সক্ষম হয়। তবে ডুবে যাওয়া মাটির ট্রলারটি এখনও ঘটনাস্থলে ডুবন্ত অবস্থায় রয়েছে।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা ইকবাল হোসেন-১ নামক বালুবাহী বাল্কহেডের চারজনকে আটক করেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।