
আমার কাগজ প্রতিবেদক
বায়তুল মোকাররমে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের ‘পরিকল্পনার সময়’ নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মনিরুল ইসলাম (৪০), মোহতাসিন বিল্লাহ (৪০) ও মাহমুদুল হাসান (২১)।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উত্তরা ১১ ও ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
একইসঙ্গে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে নিতে সিটিটিসির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার ডিএমপির এক বার্তায় বলা হয়, হিযবুত তাহরীরের সদস্যরা ৭ মার্চ বায়তুল মোকাররাম মসজিদ এলাকায় ‘মার্চ ফর খিলাফা’ নামে একটি সমাবেশ পালন সংক্রান্ত ‘গোপন পরিকল্পনা করছে’, এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তাররা প্রত্যেকে হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে জব্দ করা আলামত থেকে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হিযবুত তাহরীর, রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠা এবং শরিয়া বাস্তবায়ন যাদের মূল লক্ষ্য।
দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা সংগঠনটি এখন অনেকটা প্রকাশ্যে তাদের কাজ চালাচ্ছে। শুক্রবার তারা বায়তুল মোকারমে কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগিয়েছে; বিভিন্ন জায়গায় লিফলেটও বিলি করছে।
নিষিদ্ধ এই সংগঠন বায়তুল মোকাররমে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ার করেছে ডিএমপি।
এরপর মধ্যরাতেই উত্তরায় অভিযান চালিয়ে সংগঠনটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল পুলিশ।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনই ঢাকায় মিছিল করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরপর আরও নানা দাবিতে মিছিলের পাশাপাশি ঢাকায় গোলটেবিল বৈঠকও করেছে সংগঠনটি। চট্টগ্রামেও পালন করেছে নানা কর্মসূচি।
সংগঠনটির মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম বিবিসি বাংলাদেশকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সরকার পতন আন্দোলনে শুরু থেকেই তাদের কর্মীরা অংশ নেন; তবে তারা কোনো ব্যানার ব্যবহার করেননি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে হিযবুত তাহরীরের পোস্টারও লাগানো হয়েছিল।
২০০১ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করা হিযবুত তাহরীর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য গত সেপ্টেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে আবেদন করলেও সরকারের তরফে কোনো বক্তব্য আসেনি।