
আমার কাগজ ডেস্ক
শ্রম আইন লঙ্ঘন এবং মানি লন্ডারিং মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ১৭৫ জন বিশ্বনেতা শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েছেন। তবে এ ধরনের খোলা চিঠি লাখো শহীদের ত্যাগে অর্জিত দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলে মনে করছেন ১৯৮ জন বিশিষ্ট আমেরিকান-বাংলাদেশি।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে শিক্ষক, প্রকৌশলী, লেখক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশায় নেতৃত্বদানকারী আমেরিকান-বাংলাদেশিরা স্বাক্ষর করেছেন।
এতে তারা উল্লেখ করেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যথাযথভাবে না বুঝেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর খোলা চিঠি দেয়া হয়েছে। বিবৃতিদানকারী আমেরিকান-বাংলাদেশিরা মনে করেন এই খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা ইউনূসের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
বিবৃতি আরও উল্লেখ করা হয়, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মানি লন্ডারিং, কর ফাঁকি, শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। মামলাটি এখনও বিচারাধীন, কোনো রায় হয়নি। অন্যদিকে খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো তারা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার যোগ্যতা বিবেচনা না করেই নিজেদের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। বিবৃতিদাতাদের দাবি, বহু বছর ধরে ডা. ইউনূসের অসদাচরণ আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। জনসংযোগ এবং প্রচারের কৌশল ব্যবহার করে ডা. ইউনূসের প্রতারণার শিল্প সম্পর্কেও আমরা সচেতন। যাইহোক, আমরা, মার্কিন নাগরিক হিসেবে এ সম্পর্কে কোনো অভিযোগ করিনি। তবে আমরা বিশ্বাস করি চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা ড. ইউনূসের প্রতারণার শিকার হয়ে থাকতে পারেন।
ইউনূসের বিচার ইস্যুতে সীমাবদ্ধ না থেকে খোলা চিঠি দেয়া বিশিষ্টজনরা বাংলাদেশের নির্বাচন ও বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ ইস্যুতেও কথা বলেছেন উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, বাংলাদেশিদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা আপনাদের খোলা চিঠি প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই।
এর আগে দেশের ১৭১ বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫০ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬৬ শিক্ষক এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করতে এবং বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য শেখ হাসিনাকে ১৭৫ জন বিশ্বনেতা খোলা চিঠি দিয়েছেন । চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস হোর্তা, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনও রয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ড. ইউনূসের যদি অপরাধ না করে থাকেন, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না। যারা বিবৃতি দিয়ে বিচার স্থগিত করতে বলেছেন তারা আইনজীবী পাঠাক। এক্সপার্টরা দেখুক, অনেক কিছু পাবেন। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। সবকিছুই আইন মতো চলে।