রিভিউ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ডিন এলগার বেঁচে যাওয়ার পর স্টাম্প মাইকে ধরা পড়ে ভারতের ক্রিকেটারদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ডিআরএস ও সম্প্রচারকারী সংস্থা সুপারস্পোর্টকে নিয়ে বিরাট কোহলি ও তার সতীর্থদের মন্তব্যে আইসিসির আচরণবিধি ভাঙার ও সেকারণে শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। তবে ম্যাচ অফিসিয়ালরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনেননি।
শুক্রবার ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কেপটাউন টেস্ট শেষ হওয়ার পর কথা বলেছেন ম্যাচ অফিসিয়ালরা। সেখানে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট ভারতের ক্রিকেটারদের তাদের আচরণের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তবে কোহলিদের তিরস্কার করা হয়নি কিংবা তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙার কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের খেলোয়াড়রা শাস্তি এড়িয়ে গেছেন কারণ, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রযুক্তির বিরুদ্ধে, কোনো ম্যাচ অফিসিয়ালের বিরুদ্ধে নয়। আর আইসিসির আচরণবিধিতে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান বা প্রযুক্তির সমালোচনার জন্য কোনো ধারা নেই।
ডিআরএস নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে গত বৃহস্পতিবার। চতুর্থ ইনিংসে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ায় ২১তম ওভার চলছিল তখন। ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ডেলিভারি আঘাত করে এলগারের হাঁটুর নিচে। আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস তৎক্ষণাৎ দেন আউটের সিদ্ধান্ত। এরপর রিভিউ নেন বাঁহাতি ওপেনার এলগার। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল চলে যেত স্টাম্পের উপর দিয়ে। তৃতীয় আম্পায়ার আল্লহুডিয়েন পালেকার ইরাসমাসকে নির্দেশ দেন সিদ্ধান্ত বদল করার জন্য।
ভারতের ক্রিকেটারদের মধ্যে তখন ফুটে ওঠে বিরক্তি আর অবিশ্বাস। স্টাম্প মাইকে ধরা পড়ে আম্পায়ার ইরাসমাসের প্রতিক্রিয়াও, ‘এটা তো অসম্ভব।’ কারণ, বল এলগারের প্যাডের যে জায়গায় লেগেছিল, সেখান থেকে অতটা উপরে উঠে স্টাম্পে না লাগা বিস্ময়করই বটে।
ওই ঘটনার পর ভারতের ক্রিকেটাররা যা করে, তা ক্রিকেট বিশ্বে বইয়ে দেয় আলোচনা-সমালোচনার জোয়ার। স্টাম্প মাইকের বদৌলতে ধরা পড়ে সবই। দলটির সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলেন, ‘গোটা দেশ খেলছে ১১ জনের বিরুদ্ধে।’
অশ্বিন লক্ষ্যবস্তু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সম্প্রচারকারী সংস্থা সুপারস্পোর্টকে, ‘অন্যভাবে জেতার পথ খোঁজা উচিত সুপারস্পোর্টের।’
কোহলি ছাড়িয়ে যান সবাইকে। স্টাম্প মাইকের কাছে গিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু প্রতিপক্ষ নয়, নিজেদের দলের দিকেও খেয়াল করো। সব সময় কেবল লোকজনকে ধরার চেষ্টা।’
তবে কেপটাউন টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে ডিআরএস বিতর্ক নিয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন কোহলি, ‘মাঠে যা ঘটেছে, আমরা তা বুঝেছি এবং মাঠের ভেতরের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বাইরের লোকেরা জানে না। তাই মাঠে আমরা যা করেছি সেটার ন্যায্যতা প্রমাণের চেষ্টা করা এবং আমাদের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলাটা ভুল।’