আমার কাগজ ডেস্ক:
চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের জমি দখল ও প্রাণনাশের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা শেখ ফরিদ মৃধা। সন্ত্রাসীরা ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়ে বিগত দুই বছর যাবত তাদেরকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে চাঁদপুর আদালতে মামলা চলমান আছে। ফরিদগঞ্জ থানায় জিডি করা হয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা এতটাই প্রভাবশালী যে কোন আইন আদালতের তোয়াক্কা করে না। তারা গায়ের জোরেই সব কিছু করতে চায়।
গতকাল শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসেছিলেন শেখ ফরিদ মৃধা। তিনি সন্ত্রাসীদের অন্যায়-অত্যাচারের বর্ণনা দিতে গিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন।
তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জে পৈতৃক ভূমিতে আবাদকৃত ফসল ধ্বংস করেছে প্রভাবশালীরা। আত্মরক্ষা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও তার দলবল দ্বারা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে এলাকা থেকে। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের আইনি সুরক্ষার দাবি করেছেন। তাদের বাড়ি উপজেলার রূপসা (উত্তর) ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামে। মৃত জয়নাল আবেদীন মৃধার ছেলে শেখ ফরিদ মৃধা। রুস্তমপুর বাজারের সন্নিকটে পৈতৃক ভূমিতে বৃদ্ধ মা (৬৫), তিন ভাই, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
পিতার মৃত্যুর পর প্রায় দু’বছর ধরে খরিদা সম্পত্তি জোর-জবরদস্তি করে দখলে নিতে চান ঢাকা জেলার মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাহারের নেতৃত্বে মোজাম্মেল হোসেন বাবুল, আবুল কাসেম, নুরুল আমিন ও লোকমান আমিনসহ প্রতিবেশী প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি। গত প্রায় দু’বছর ধরে ওই জোর-জবরদস্তি চলছে বলে তিনি দাবি করে বলেন, রুস্তমপুর মৌজায় তার বাবার খরিদকৃত বেশ কয়েকটি দাগের অন্দরে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভূমি রয়েছে। নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে ওই ভূমি জোরজবর দখল করার পাঁয়তারা করছেন অভিযুক্তরা। মালিকানা না থাকা সত্ত্বেও উল্লিখিত প্রভাবশালী চক্র আমাদের জমিতে গত ৪ মার্চ ৩০-৩৫ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী নিয়ে আবাদকৃত ফসল ধ্বংস করেছে ও সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বর্বরতার চিত্র দেখে জীবন বাঁচাতে আমরা আত্মগোপন করতে বাধ্য হই। তিনি দাবি করেন, প্রভাবশালীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে শেখ ফরিদ মৃধা বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রসী হামলার শিকার হন। এ ছাড়া, তার ছোট ভাইকে চুরির মামলায় জড়ানো, তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হলেও ওইসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, প্রভাবশালীরা থেমে নেই। তারা মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন তাদের। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালতে আমাদের মামলাও চলমান আছে। কিন্তু, তারা আইন আদালতের তোয়াক্কা করছেন না। শেখ ফরিদ মৃধার মা ফাতেমা বেগম, ভাই ফয়েজ আহমেদ, স্ত্রী নাসরিন, সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি সরকারের উচ্চমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমি ও আমার পরিবারের সকলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ওই দলেরই নেতা নামধারীরা আমাদের জমি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ফরিদ মৃধা আরো জানান, দিনের পর দিন তিনি এক কাপড়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাকে কৌশলে ঢাকা থেকে অপহরণের চেষ্টাও চালানো হয়েছে। কিন্তু তিনি নিজ বুদ্ধিমত্তার জোরে আপাততঃ বেঁচে গেছেন। কিন্তু যেকোন মুহূর্তে তারা আবারো হামলা চালাতে পারেন বলে তিনি আশংকা করছেন।